রবিবার, ৭ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

হিলিতে শুরু হয়নি যাত্রী বহির্গমন

হিলি প্রতিনিধি

হিলিতে শুরু হয়নি যাত্রী বহির্গমন

করোনার কারণে দীর্ঘ ১৪ মাস বন্ধের পরে দিনাজপুরের হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট চালু হলেও ভারত যাত্রী গ্রহণ না করায় এখনো এই পথ দিয়ে যাত্রী বহির্গমন শুরু হয়নি। শুধুমাত্র ভারত থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাত্রীরা দেশে ফিরতে পারছেন। এদিকে যাত্রী বহির্গমন বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন এই পথ দিয়ে চলাচলকারী রোগীসহ ব্যবসায়ীরা। তেমনি সরকারবঞ্চিত হচ্ছে রাজস্ব আদায়  থেকে। অবিলম্বে এই পথ দিয়ে যাত্রী বহির্গমন প্রক্রিয়া চালুর দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীসহ রোগীরা। হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনার সংক্রামণ বেড়ে যাওয়ার কারণে গত বছরের ২৩ মার্চ মাসে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট দিয়ে দুদেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার বন্ধ হয়ে যায়। পরে করোনার সংক্রামণ কিছুটা কমলে দীর্ঘ ১৪ মাস পর গত ১৬ মে থেকে পুনরায় হিলি ইমিগ্রেশন  চেকপোষ্ট দিয়ে দুদেশের যাত্রী পারাপার চালুর জন্য এর কার্যক্রম খুলে দেওয়া হয়। বর্তমানে ভারত থেকে এই পথ দিয়ে বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাত্রীরা আসতে পারলেও করোনার অজুহাতে ভারত যাত্রী গ্রহণ শুরু না করায় এখনো এই পথ দিয়ে যাত্রী বহির্গমন কার্যক্রম শুরু হয়নি। প্রতিবছর এই ইমিগ্রেশন  চেকপোষ্ট দিয়ে বহির্গমন করা যাত্রীদের থেকে ৫ কোটি টাকার মতো রাজস্ব পেলেও গত ১৯ মাস যাত্রী বহির্গমন বন্ধ থাকায় সরকার ৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকার মতো রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সর্বশেষ গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই পথ দিয়ে ৯৪ হাজার ৭৯ জন যাত্রী বাংলাদেশ থেকে ভারতে গিয়েছে। বিপরীতে ভারত থেকে ৮৬ হাজার ১৫০ জন যাত্রী দেশে এসেছেন। হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট দিয়ে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরা শুভাষ চন্দ্র রায় বলেন, আমার বাসা দিনাজপুরেরর পার্বতীপুর উপজেলায় সে হিসেবে আমার কাছের বর্ডার হলো হিলি। কিন্তু ভারতের পক্ষ থেকে এখনো এই পথ দিয়ে যাত্রী গ্রহণ না করায় আমরা এই পথ দিয়ে যেতে পারিনি। আমাদেরকে যশোরের বেনাপোল ইমিগ্রেশন  চেকপোষ্ট দিয়ে ভারতে ঢুকতে হয়েছে ছেলের চিকিৎসার জন্য। এতে করে আমাদেরকে অনেক ঘুরতে হয়েছে। তেমিন বাচ্চাকে নিয়ে অনেক দুর্ভোগ  পোহাতে হয়েছে। তেমনি আমাদের খরচ অনেক বেশি হয়েছে। হিলি দিয়ে যেখানে মাত্র ২ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র ২  থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে এখানে আসতে পারি। কিন্তু সেখানে ২/৩ হাজার টাকা বেশি দিয়ে ওই দিক দিয়ে যাওয়া আমাদের মতো গরিব মানুষের জন্য অনেক কষ্টকর। দেশে ফেরা অপর যাত্রী গৌতম চন্দ্র সাহা বলেন, আমার বাড়ি নওগাঁয়, আমার স্ত্রী গুরুত্বর অসুস্থ্য এই রোগী নিয়ে আমি তো বাংলাদেশে খুব সমস্যার মধ্যে পড়েছিলাম। পাসপোর্ট করলাম। এরপর ভিসা করলাম সেখানে বর্ডার দিল বেনাপোল। হিলি ছাড়া সেই বেনাপোল দিয়ে যেতে খুব কষ্ট। এত কষ্ট  পেয়েছি যে জীবনে ভুলব না কষ্টের কথা। সেই সঙ্গে  বেশি খরচ হয়েছে। হিলি দিয়ে যেতে যা খরচ লাগত।  সেখানে ওই পথ দিয়ে ডাবলের বেশি খরচ লাগছে। কাস্টমস ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম সম্পূর্র্ণ বাংলাদেশ  থেকে পার হয়ে ভারতে গেলাম।

এরপর সেখান থেকে শিয়ালদহ স্টেশনে গেলাম সেখানি গিয়ে আমার স্ত্রী ও  মেয়েকে হারিয়ে ফেললাম। খুব কষ্ট করে তাদেরকে খুঁজে বের করে চিকিৎসা শেষ করে আবারও  বেনাপোল দিয়ে বের হতে বলে কিন্তু আমি ওই পথ দিয়ে না যাওয়ার কারণে আবারও এনওসি নিয়ে হিলি দিয়ে ফেরত আসছি। যদি হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট দিয়ে ভারতে যাওয়া যেত তাহলে আমাদের মতো মানুষদের যারা ভারতে চিকিৎসার জন্য রোগী নিয়ে যায় তাদের জন্য খুব ভালো হতো।

সর্বশেষ খবর