রবিবার, ৭ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

ঝিনাইদহে ডায়রিয়ার প্রকোপ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

ঝিনাইদহে ডায়রিয়ার প্রকোপ

শহরের পৌর এলাকায় হঠাৎ করেই বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। গত দুই দিনে জেলা সদর হাসপাতালে দেড় শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছে। হাসপাতালে শয্যা না পেয়ে মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের। সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য মতে, গত বুধবার রাত থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৬০ জন রোগী। আর বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ১১০ জন। যাদের অধিকাংশ রোগীর বাড়ি শহরের হামদহ, কাঞ্চনপুর, মোল্লাপাড়া এলাকায়। গতকাল সকালে সদর হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে দেখা যায়, বেড কিংবা মেঝেতে পর্যন্ত নেই তিল ধারণের ঠাঁই। ভর্তি রোগীর পাশাপাশি হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছে রোগী। আক্রান্তদের বেশিরভাগই নারী ও বয়স্ক। আলহেরাপাড়া এলাকার জুয়েল নামের এক রোগীর স্বজন বলেন, আমাদের ফ্যামিলিতি তিনজন অসুস্থ হয়েছে। পরশু দিন রাতে ভর্তি করেছি। আমার বোন সুস্থ হয়েছে। বোনের বাচ্চা এখনো সুস্থ হয়নি। কয়দিন থাকতে হবে তা তো বলতি পারছি না। খন্দকারপাড়া এলাকার সোনালি নামের এক রোগী বলেন, হঠাৎ করে আমার মেয়ের পাতলা পায়খানা হয়েছে। তারপর আমার হাজবেন্ডের, এরপর আমার হয়েছে। কেন হলো তা তো বলতে পারি না। আমরা তো টিউবয়েলের পানি খাই। সাপ্লাই পানি দিয়ে গোসল আর রান্না করি। আমার শুধু একার নয়। আমার বাড়ির আশপাশের লোকজনেরও হয়েছে। চৈতি নামের এক রোগী বলেন, স্যালাইনগুলো আমাদের বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। ওষুধও আমরা অনেক সময় পাচ্ছি না। নার্সরাও সেবা দিতে পারছে না ঠিকমতো। সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাপস কুমার বলেন, ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে যারা আসছেন তারা বয়স্ক। শিশুরা কম আক্রান্ত হচ্ছে। পৌরসভার একটি এলাকা থেকে রোগী বেশি আসছে। বেশি সংখ্যক রোগীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। যেহেতু আমাদের জনবল কম।

তার পরও আমরা সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করছি তাদের সেবা দিতে। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের কনসালট্যান্ট (মেডিসিন) ডা. জাকির হোসেন বলেন, রোগীরা বেশির ভাগই একটি নির্দিষ্ট এলাকার। এতে আমরা ধারণা করছি কোনো খাবার অথবা পানির মাধ্যমে এটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। যারা আক্রান্ত হয়নি তাদের প্রতি আমাদের পরামর্শ তারা যেন পরিষ্কার বিশুদ্ধ পানি পান করেন এবং হাত ধৌত করেন। সেই সঙ্গে বাসি-পচা খাবার এড়িয়ে চলেন। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন-অর-রশিদ বলেন, শিশু ডায়রিয়া আগের মতোই আছে, বয়স্ক মানুষের ডায়রিয়া হঠাৎ করে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা সব জায়গায় যোগাযোগ করেছি। আমাদের ওষুধ, স্যালাইন পর্যাপ্ত আছে। আমরা আশা করছি এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারব।

সর্বশেষ খবর