বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

দক্ষিণাঞ্চলে বাস ভাড়ায় নৈরাজ্য

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি

দক্ষিণাঞ্চলে বাস ভাড়ায় নৈরাজ্য

দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা ও বরগুনা মহাসড়কসহ আঞ্চলিক সড়কে বাস ভাড়ায় চলছে  নৈরাজ্য। সরকার নির্ধারিত ভাড়া উপেক্ষা করে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করার অভিযোগ রয়েছে। এতে প্রতিদিনই যাত্রীদের সঙ্গে বাসের স্টাফদের বাগ্বিতন্ডার ঘটনা ঘটে। বাসমালিক সমিতি কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়েও এর কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। ভুক্তভোগী যাত্রীদের আরও অভিযোগ, প্রশাসন জেনেও এর বিরুদ্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণে নীরব ভূমিকা পালন করছে। দ্রুত অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা। জানা গেছে, গত বুধবার জ্বালানি মন্ত্রণালয় কেরোসিন এবং ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি করে। জ্বালানি তেলের দাম কমানোর দাবিতে বাসমালিক সমিতি তিন দিনের ধর্মঘট পালন করেছে। সরকার কর্তৃক বাসভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণায় তারা ওই ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয়। কিন্তু দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা ও বরগুনা মহাসড়কসহ আঞ্চলিক সড়কে বাসভাড়ায় চলছে নৈরাজ্য। বাসভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণার পরপরই বাসমালিক সমিতি ও বাসের স্টাফরা ইচ্ছামাফিক ভাড়া আদায় করছে।  সরকার নির্ধারিত বরিশাল থেকে কুয়াকাটার ভাড়া ২৩০ টাকা। কিন্তু বাসমালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ আদায় করছে ২৭০ টাকা। পাগলা থেকে আমতলীর ভাড়া ৮০ টাকা কিন্তু আদায় করছে ৯০ টাকা। পটুয়াখালী থেকে আমতলীর ভাড়া ৬০ টাকা কিন্তু আদায় করছে ৭০ টাকা। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নিয়ে প্রতিদিন যাত্রীদের বাগ্বিতন্ডার ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ রয়েছে, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদ করলেই বাসের স্টাফরা যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। এমনকি বাস থেকে নামিয়ে দেন। জানা গেছে, বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে চলাচলকারী বিআরসিটি কর্তৃপক্ষ সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায় করছে। কিন্তু মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ সরকারের নির্দেশনার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। গতকাল কুয়াকাটাগামী জান্নাতি বাসের যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বরিশাল থেকে কুয়াকাটা ২৩০ টাকার ভাড়া আদায় করছে ২৭০ টাকা। লেবুখালী থেকে আমতলীর ভাড়া ৮০ টাকা, আদায় করছে ৯০ টাকা। পটুয়াখালী থেকে আমতলীর ভাড়া ৬০ টাকা, আদায় করছে ৭০ টাকা। এভাবেই দক্ষিণাঞ্চলের মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। বাসযাত্রী সুরাইয়া, লাবণী, সোহেল হাওলাদার ও জব্বার মিয়া বলেন, বাসের কর্মচারীরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলেই ঝগড়াঝাটি শুরু করে। দ্রুত অতিরিক্ত বাস ভাড়া আদায় বন্ধের দাবি জানান তারা। যাত্রী মিরাজ, কুলসুম ও শাওন বলেন, আগে পটুয়াখালী থেকে আমতলীর বাসভাড়া ছিল ৫০ টাকা কিন্তু তেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে মালিক সমিতি বাসভাড়া আদায় করছে ৭০ টাকা। তাতে আগের ভাড়ার চেয়ে ৪০% বৃদ্ধি করা হয়েছে। এটা চরম  নৈরাজ্য। তেলের দাম বাড়িয়ে বাসমালিক সমিতির লাভ হয়েছে। বরগুনা বাসমালিক সমিতির কার্যকরী সদস্য মো. হাসান মৃধা অতিরিক্ত বাস ভাড়া আদায়ের কথা অস্বীকার করে বলেন, সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। পটুয়াখালী বাসমালিক সমিতির সভাপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন মৃধা বলেন, আগামী সপ্তাহে চার জেলার মালিক সমিতি সমন্বয় মিটিং করে বাসভাড়া পুনঃনির্ধারণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর