বুধবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

কোটি কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা জেকা বাজার, দিশাহারা গ্রাহক

পাবনা প্রতিনিধি

কোটি কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা জেকা বাজার, দিশাহারা গ্রাহক

প্রতি লাখে ৩০ হাজার মুনাফা দেওয়া জেকা বাজারের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের জমা করা কোটি কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাজবাড়ী সদর থানায় গতকাল ঊর্ধ্বতন চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ১৫ কোটি টাকা নিয়ে দেশ ত্যাগের চেষ্টার অভিযোগে মামলা করেছেন প্রতিষ্ঠানের বিপণন পরিচালক ইশানুর রহমান। গ্রাহকদের বিনিয়োগ করা অর্থ ফেরত চাওয়ায় আত্মগোপন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির রাজবাড়ী ও পাবনার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। রাজবাড়ী সদর থানার ওসি শাহদত হোসেন বলেন, সম্প্রতি জেকা বাজার নামে একটি প্রতিষ্ঠান ই-কমার্সের আড়ালে অবৈধভাবে এমএলএম ব্যবসা পরিচালনা করছিল। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে রাজবাড়ী শহরের নান্নু টাওয়ারে অবস্থিত প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালায় প্রশাসন। সেখানে নকল পণ্য বিক্রি ও ই-কমার্স ব্যবসার বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় তাদের জরিমানা ও প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। বৈধ কাগজ দেখানোর জন্য সময় বেঁধে দেয় প্রশাসন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি রাজবাড়ীর স্থানীয় প্রশাসন স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়। ওসি জানান, লাখে ৩০ হাজার টাকা মুনাফা দেওয়ার প্রলোভনে রাজবাড়ী, পাবনা, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর ও মানিকগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার গ্রাহকের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় জেকা বাজার সংশ্লিষ্টরা। প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালালে তাদের কারসাজির বিষয়টি জানাজানি হয়। তখন থেকে গ্রাহকদের টাকা নিয়ে আত্মগোপনে চলে যান প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাবের উল্লাহ খান জাবের, মনসুরসহ তার সহযোগীরা। তাদের খোঁজ না পেয়ে গ্রাহকের চাপে ওই প্রতিষ্ঠানের বিপণন পরিচালক ইশানুর রহমান সোমবার মামলা করেন। এদিকে পাবনার খলিলপুর এলাকার জেকা বাজারের পরিচালক আনিস মাস্টার, বাসার, রাজিব মোল্লাসহ কয়েকজন প্রায় ১০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন। দিশাহারা হয়ে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। তারা প্রতারক চক্রকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। জেকা বাজারের একাধিক গ্রাহক বলেন, আমরা কিস্তিতে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করেছি। এক হাজার টাকার বিনিময়ে তারা আমাদের একটি করে আইডি দিয়েছেন। ওই আইডি থেকে প্রতিদিন ভিডিও দেখলে ভিডিওপ্রতি ১০ টাকা পেতাম। প্রথমদিকে ভালোই আয় হতো। গত ২ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের পর আর টাকা পাইনি। এখন কিস্তির টাকা কীভাবে পরিশোধ করব? জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর রাজবাড়ী কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শরিফুল ইসলাম বলেন, কয়েক জেলায় ‘জেকা বাজার লিমিটেড’ নামে অবৈধ একটি এমএলএম কোম্পানি প্রায় ২৫ হাজার গ্রাহকের ৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে শুনেছি। অধিক মুনাফার লোভে কিছু গ্রাহক ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করেছেন। জেকা বাজারের মালিক পক্ষকে আইনের আওতায় না আনা হলে গ্রাহকদের টাকা ফেরত পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

সর্বশেষ খবর