মেহেরপুরের সর্বত্র জমজমাট অনলাইন জুয়া। শহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে এই জুয়া খেলা। কিশোর ও যুবকরা অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ায় অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। জেলার মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর ইউনিয়নের কোমরপুর গ্রামে সোনা গাইনের কলেজ পড়ুয়া ছেলে মাহফুজুর রহমান। পিতা ও নানা আলাউদ্দিন আদম ব্যবসার সূত্র ধরে রাশিয়া প্রবাসীর সঙ্গে সখ্যর মাধ্যমে পা রাখে অনলাইন জুয়ায়। সঙ্গে নেন। এরপর তাদের ব্যবসা বাড়তে থাকে। মুজিবনগর উপজেলার কমরপুর যতারপুর মহাজনপুর গোপালপুর গ্রামের অর্ধশত বিভিন্ন পেশার মানুষ এই জুয়ার এজেন্ট হিসেবে জড়িত। ওই যুবক ৪৬ লাখ টাকা কোমরপুর থেকে গাংনী নেওয়ার পথে ছিনতাইকারীদের গুলিতে নিহত হলে প্রশাসনের নজরে আসে এই অনলাইন জুয়া। ওই যুবক নিহতের পর সন্ত্রাসী হামলা ও পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ও প্রভাবশালীদের জুয়ার চ্যানেল উপহার দিয়ে দলে ভেড়ান তিনি। এর পর মেহেরপুরের দায়িত্ব এসব এজেন্টের হাতে ছেড়ে দিয়ে সে ঢাকায় পাড়ি জমায়। এসব এজেন্টের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নুরুল, জামান, শিশির, সোহাগ, মাদার, নাইট গার্ড মাবুদ, পলাশ ও সোহাগ মিয়া। প্রতি এজেন্টের রয়েছে একাধিক চ্যানেল। প্রতি চ্যানেলে দিনে আয় হয় লক্ষাধিক টাকা। এই চ্যানেলের মাধ্যমে এজেন্টরা আবার সাব এজেন্ট নিয়োগ করে। সাব এজেন্টদের নিতে দিতে হয় ১০/১৫ লাখ টাকা। এই সাব এজেন্টরা জুয়াড়িদের সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকার বিনিময়ে দেন বিভিন্ন রেটিং সাইট। অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল দিয়ে অনায়েসে অনলাইনে খেলা সম্ভব হওয়ায় গ্রাম পর্যায়ে জুয়ার আসক্তি ছড়িয়ে পড়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জুয়াড়ি জানান, অনলাইন জুয়া খেলোয়াড়রা প্রথম সাব এজেন্টদের কাছে মোবাইল ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা জমাদেন। এরপর একটি নতুন অনলাইন অ্যাকাউন্ট তৈরি করে দেয় এবং সেখানে তাদের টাকা জমা হয়। পরবর্তীতে জুয়াড়িরা বিভিন্ন খেলা বিশেষ করে আইপিএল, বিপিএলসহ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে দলের পক্ষে বাজি ধরে। চাইলে যে কেউ ক্যাসিনোও খেলতে পারেন।