শনিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

ঝুঁকি নিয়ে সেতু পারাপার

রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

ঝুঁকি নিয়ে সেতু পারাপার

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলা সদরের গহিনখালী খালের ওপর নির্মিত লোহার সেতুটি ধসে পড়ার আট বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিন সংস্কারবিহীন থাকায় সেতুটির পূর্বের চিহ্ন হারিয়ে যাচ্ছে। হাজার হাজার মানুষের পারাপারের এ মাধ্যমটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। ঝুঁকিপূর্ণ এ সেতু দিয়ে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাগামী শিক্ষার্থীসহ প্রতিনিয়ত শত শত মানুষের চলাচল কোনোভাবেই থামছে না। সেতুর দুই পাড়ে রয়েছে দুটি বাজার ও ৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। জনগুরুত্বপূর্ণ এ সেতুটি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকলেও তা সংস্কারের কোনো মাথা ব্যথা নেই সংশ্লিষ্ট দফতরের। জানা গেছে, রাঙ্গাবালী উপজেলা সদর ও ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের সঙ্গে সড়ক পথে যোগাযোগের লক্ষ্যে গহিনখালী খালের ওপরে প্রায় দেড় যুগ আগে একটি লোহার সেতু নির্মিত হয়। অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণের কারণে সেতুর নিচ দিয়ে কার্গো, ট্রলার চলাচল করতে গিয়ে ধাক্কা লেগে সেতুটি নড়বড়ে হয়ে যায়। এরপরে ঝুঁকিপূর্ণ সাইনবোর্ড লাগিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হয়। এরই মধ্যে হঠাৎ করে সেতুটি ধসে পড়ে। যার কারণে দুই পাড়ের স্কুল, কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে এক পর্যায়ে দুই পাড়ের ব্যবসায়ীরা নিজেদের অর্থায়নে ও স্বেচ্ছাশ্রমে ভাঙা সেতুর পিলারের ওপরে কাঠ বসিয়ে পারাপার যোগ্য করে তোলেন। দীর্ঘদিন কাঠের ওপর দিয়ে মানুষ চলাচল করলেও এখন সেটিও নষ্ট হয়ে গেছে। বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন ওই সেতু দিয়ে রাঙ্গাবালী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গাবালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গহিনখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আমলিবাড়িয়া সিনিয়র মাদরাসা, হালিমা খাতুন মহিলা কলেজ ও ছোটবাইশদিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার  শত শত কোমলমতি শিক্ষার্থী, নারী, বৃদ্ধা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করলেও কোনো প্রকার যানবাহন চলাচল একেবারেই অসম্ভব। লোকজন ভারী বোঝা নিয়ে ওই ব্রিজ দিয়ে চলাচল করতে পারছে না। রাঙ্গাবালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মারিয়াম বলে, আমরা প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে স্কুলে যাই। সেতুটি পার হওয়ার সময় শরীর কাঁপতে থাকে, খুব ভয় লাগে। গহিনখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওবায়দুল কবির বলেন, আমরাইতো কখনো বিনা কারণে ওই সেতুতে উঠতে সাহস করি না। আর ছোট ছোট কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ভয়ে অনেকে স্কুলে আসতে চায় না।

এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী সদর ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান মামুন খান বলেন, দীর্ঘদিন সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। সেতুটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছি। কিন্তু এখনো কোনো অগ্রগতি দেখছি না। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এলজিইডির রাঙ্গাবালী উপজেলা প্রকৌশলী মো. মিজানুল কবির জানান, বিষয়টি ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে সংস্কার বা নির্মাণ করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর