মঙ্গলবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

চরভদ্রাসনে কালো টাকা উড়ছে

ইউপি নির্বাচন

কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর

চরভদ্রাসনে কালো টাকা উড়ছে

তৃতীয় দফায় আগামী ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। এ উপজেলার চর ঝাউকান্দা ইউনিয়নে সীমানা নিয়ে জটিলতা থাকায় নির্বাচন হচ্ছে না। যে তিনটি ইউনিয়নে নির্বাচন হচ্ছে সেগুলো হলো চরভদ্রাসন সদর, চর হরিরামপুর ও গাজীরটেক। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গোটা এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। বিরামহীন প্রচারণায় রয়েছেন  চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্যরা। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে প্রত্যন্ত এলাকা। হাট-বাজারের চা স্টল থেকে শুরু করে সর্বত্রই এখন নির্বাচনী আমেজ। মোড়ে মোড়ে স্থাপন করা হয়েছে প্রার্থীদের নির্বাচনী অফিস। আর এসব অফিসে সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত অবধি লোকে লোকারণ্য থাকছে। মাইকের প্রচারণায় কান ঝালাপালা অবস্থা মানুষের। এবারের নির্বাচনে বিভিন্ন প্রার্থীদের প্রচারণায় নারী কর্মীদের অংশগ্রহণ বেশ লক্ষণীয়। দলবেঁধে নারীরা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন ভোট প্রার্থনায়। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে চলছে ভোটারদের মন জয় করতে প্রার্থী ও তাদের কর্মীদের নানা কৌশল। ভোটারেরাও প্রার্থীদের কাছ থেকে আদায় করে নিচ্ছেন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি। আর নির্বাচনের মাঠে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে চলছে অপপ্রচারও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়াও বিভিন্নভাবে বেশ কিছু প্রার্থীর বিপক্ষে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে চালানো হচ্ছে প্রচারণা। আর এ সবকে ছাপিয়ে প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করতে ‘কালো টাকার’ খেলা শুরু হয়েছে এমন অভিযোগ রয়েছে বিস্তর। রাতের আঁধারে ভোটারদের ম্যানেজ করতে টাকা বিলিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ এখন কয়েক প্রার্থীর বিরুদ্ধে। যাদের বিরুদ্ধে টাকা ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে তারা এসব অভিযোগ ‘অপপ্রচার’ বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন। বহিরাগত ব্যক্তিদের নিয়ে প্রচারণার নামে সন্ত্রাসী মহড়ার অভিযোগ রয়েছে একাধিক চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে। কয়েক চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘন ও প্রচারণায় বাঁধাদানের অভিযোগ রিটার্নিং অফিসারের কাছে করলেও সেই অভিযোগের সুরাহা না করার কথা জানান প্রতিদ্বন্দ্বী দুজন প্রার্থী। যদিও এসব অভিযোগ বিষয়ে লিখিত কিংবা মৌখিক অভিযোগ না পাবার কথা বলেছেন উপজেলা নির্বাচন অফিসার। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসতে ততই উত্তাপ বাড়ছে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের মধ্যে। এবারের নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও দলের কয়েক নেতা স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। তিনটি ইউনিয়নের মধ্যে দুটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের। একটি ইউনিয়নে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে বলে মনে করছেন ভোটাররা। চরভদ্রাসন উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে আসন্ন নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ২০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের খোকন মোল্যা ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন।

 মধ্যে রয়েছেন মোটর সাইকেল প্রতীকে আজাদ খান, ঘোড়া প্রতীকে আবুল খায়ের, আনারস প্রতীকে মাহফুজুর রহমান, টেবিল ফ্যান প্রতীকে মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, টেলিফোন প্রতীকে মো. সাজ্জাদ হোসেন। গাজীরটেক ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আহসানুল হক মামুন ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন টেলিফোন প্রতীকে মো. আয়নাল হক, মোটর সাইকেল প্রতীকে ইয়াকুব আলী, চশমা প্রতীকে মো. ফরহাদ হোসেন, আনারস প্রতীকে সৈয়দ নিজামউদ্দিন আহমেদ। চরহরিরামপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন মো. কবির হোসেন খান। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা হচ্ছেন, টেলিফোন প্রতীকে জুলহাস সিকদার, মোটর সাইকেল প্রতীকে মহাম্মদ আলী, চশমা প্রতীকে মো. আমির হোসেন খান, টেবিল ফ্যান প্রতীকে মো. জাহাঙ্গীর কবির, ঢোল প্রতীকে মো. ফরিদ মোল্যা, ঘোড়া প্রতীকে মো. মোনায়েম খান, আনারস প্রতীকে মো. রফিকুল ইসলাম ও অটোরিকশা প্রতীকে শেখ আলম।  তিনটি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা হচ্ছে ৫৩ হাজার ৫৪১ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ২৬ হাজার ৮০৮ ও মহিলা ভোটারের সংখ্যা ২৬ হাজার ৭৩৩।

সর্বশেষ খবর