মঙ্গলবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

আলম চেয়ারম্যান হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

আলম চেয়ারম্যান হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন আলম হত্যা মামলার প্রধান আসামি কাজল মিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। গতকাল দুপুরে সিলেট দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহরিয়ার কবির এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি কাজল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবী খন্দকার সাইফুর রহমান রানা ও আইনজীবী ইমরান আহমদ গতকাল বিকালে বলেন, আদালত সংশ্লিষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ বিবেচনা করে আলম হত্যা মামলার প্রধান আসামি কাজল মিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন।

রায়ের সময় আসামি কাজল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এদিকে এই রায়ে সন্তুষ্ট নন বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। নিহত আলমের মামাতো ভাই জাফর আহমদ। তিনি গতকাল বিকালে মুঠোফোনে বলেন, আসামি কাজল প্রকাশ্য দিবালোকে আমার ভাইকে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। কাজল আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দীও দিয়েছেন। মামলার সব সাক্ষী আদালতে এসে আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। আমরা আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড আশা করেছিলাম। এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি হাতে পাওয়ার পর আমরা হাই কোর্টে আসামির মৃত্যুদন্ডের জন্য আপিল করব। মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সকালে ইউপি সদস্য মাসুক আহমদকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে আলীমপুর গ্রামে একটি জানাজার নামাজে অংশগ্রহণের জন্য রওয়ানা দেন উত্তর শাহবাজপুর ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান আবুল হোসেন আলম। লাতু বিজিবি ক্যাম্পের কাছে পৌঁছলে আগে থেকে সেখানে ওতপেতে থাকা কাজল মিয়া চলন্ত মোটরসাইকেলের পেছনে বসা আবুল হোসেন আলমের বাম হাতে কোপ দিয়ে মোটরসাইকেলসহ তাকে রাস্তায় ফেলে উপর্যুপরি কুপিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা আলমকে দ্রুত উদ্ধার করে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত আবুল হোসেন আলম সায়পুর গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে। এ ঘটনায় নিহত আলমের বাবা খলিলুর রহমান বাদী হয়ে কাজল মিয়াকে প্রধান এবং আরও কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে বড়লেখা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের পর তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রধান আসামি কাজল মিয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরবর্তীতে মামলাটি মৌলভীবাজার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে সিলেট দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। সম্প্রতি এই মামলায় মোট ২৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। গত ২৫ অক্টোবর সিলেট দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে আলম হত্যা মামলার আসামি কাজল মিয়াকে ৩৪২ ধারায় পরীক্ষা করেন। পরে বাদীপক্ষের আইনজীবী আসামি কাজলের জামিন বাতিলের জন্য আদালতে আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক আসামি কাজল মিয়ার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।

সর্বশেষ খবর