বেড়েছে শীতের মাত্রা। ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে লালমনিরহাট জেলা। শীত বাড়ায় কাঁপছে লালমনিরহাটের মানুষ। শীতের তীব্রতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। শীতের তীব্রতা হু হু করে বাড়ছে। বিশেষ করে তিস্তা তীরবর্তী এলাকার সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। গতকাল সকাল ১১টাও সূর্যের দেখা মিলেনি। শীতের তীব্রতা ও হিমেল হাওয়া বাড়তে শুরু করেছে। এতে তিস্তাপাড়ের শিশু বৃদ্ধ সবাই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। কুড়িগ্রাম রাজারহাট উপজেলার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র জানান, লালমনিরহাটে সোমবার সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। লালমনিরহাট সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানান, লালমনিরহাটে ঠাণ্ডার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়ায়, নিউমোনিয়া ও শীতজনীত রোগে আক্রান্ত হয়ে পাঁচটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে শিশুসহ ৮৭ জন। লালমনিরহাটে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে ১৩টি নদ-নদী তীরবর্তী ৬৩টি চরের প্রায় লক্ষাধিক মানুষসহ নিম্ন আয়ের শ্রমজীবীরা। শীতে খেটে খাওয়া মানুষ কাজকর্ম না পেয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। গত দুই দিনের শীতে তিস্তাপাড়ের হতদরিদ্র মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। হাঁপানি, অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, হৃদরোগসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালগুলোয় বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। গবাদিপশুও রেহাই পাচ্ছে না শীতের প্রকোপ থেকে। তিস্তাপাড়ের বৃদ্ধ মেহের আলী জানান, তিস্তার পাড়ে শীতের তীব্রতা একটু বেশি। গত দুই দিনে ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠাণ্ডায় এলাকার মানুষ কাবু হয়ে পড়েছে। গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, তার ইউনিয়নটি নদীবেষ্টিত হওয়ায় বেশির ভাগ মানুষ নদীতে ঘরবাড়ি হারিয়ে বাঁধের রাস্তায় বসবাস করছেন। শীত আর ঠাণ্ডা বাতাসের কারণে তারা ঘর থেকে বের হতে পারেন না। তাই কাজকর্ম না পেয়ে পরিবারগুলো মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। পরিবারগুলোর জন্য শীতবস্ত্রের প্রয়োজন। এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় জানান, শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই শীতজনিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৭ রোগী ভর্তি হয়েছেন। আমরা সতর্ক রয়েছি।