বুধবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
রাঙ্গাবালী-ঢাকা রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ

যাত্রী ভোগান্তি চরমে

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

যাত্রী ভোগান্তি চরমে

ঢাকা-রাঙ্গাবালী নৌরুটে ডাবল ডেকার যাত্রীবাহী লঞ্চে চাঁদাবাজি এবং হামলার ঘটনার প্রতিবাদে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। গত শনিবার থেকে এই রুটে চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে জেলার রাঙ্গাবালী, দশমিনা, গলাচিপা ও বাউফল উপজেলার বিভিন্ন লঞ্চঘাটের কয়েক হাজার যাত্রী। এসব এলাকা  থেকে ঢাকায় যাতায়াত এবং পণ্য পরিবহনের একমাত্র রুট হচ্ছে নৌপথ। তবে সংকট সমাধানে এখনো কোনো সুরাহা হয়নি। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। জানা যায়, গত শুক্রবার বিকালে দশমিনা উপজেলার আউলিয়াপুর লঞ্চঘাটে ঢাকাগামী ডাবল ডেকার যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি জাহিদ-৩ এর কর্মচারীদের মারধর এবং লঞ্চ ভাঙচুর করে নগদ প্রায় চার লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় দশমিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. ইকবাল মাহমুদ লিটন ও তার লোকজন। এ ঘটনায় শনিবার সকালে দশমিনা থানায় লঞ্চের ক্যাশিয়ার মো. ইউসুফ বাদী হয়ে ইকবাল মাহমুদ লিটনকে প্রধান আসামি করে আরও ১৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ এজাহারভুক্ত ৪ নং আসামি শিহাব হাজী ও ৭ নং আসামি হৃদয়কে  গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠায়। তবে বাকি আসামিদের গ্রেফতার না হওয়ায় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ঢাকা এবং রাঙ্গাবালী থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয় লঞ্চ কর্তৃপক্ষ।

 লঞ্চ কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ইকবাল মাহমুদ লিটন ১৭ নভেম্বর প্রথম এমভি জাহিদ লঞ্চের মালিক জাহিদ মেলকারকে চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়ে আউলিয়াপুর লঞ্চঘাট পন্টুনে নামান। এরপর তাঁর কাছে আউলিয়াপুর, বাঁশবাড়িয়া এবং হাজির হাট লঞ্চঘাটে সুপারভাইজার নিয়োগের জন্য দাবি করেন। তখন জাহিদ মেলকার জানান এসব ঘাটে লঞ্চের সুপার ভাইজার নিয়োগ দেওয়া আছে। এতে লিটন ক্ষুব্ধ হয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তখন মালিক তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে লঞ্চ দীর্ঘ সময় ঘাটে আটক করে রাখেন লিটন এবং তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা। এক পর্যায়ে যাত্রী ও লঞ্চ কর্তৃপক্ষের অনুরোধে লঞ্চ ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে গত ১৯ নভেম্বর লঞ্চটি আউলিয়াপুর লঞ্চঘাটে বিকেলে যাত্রী তুলতে নোঙর করলে আসামিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে লঞ্চে উঠে ১০জন কর্মচারীকে পিটিয়ে জখম করে। এ সময় লঞ্চের সিন্ধুক থেকে তিন লাখ ৬৫ হাজার ৬২০ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। হামলায় গুরুতর আহত লঞ্চ স্টাফ আবদুস সত্তার (৪২) এবং মো. এাহাবুবকে (২৮) পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং মো. জহিরকে (৩২) বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। হামলাকারীরা এ সময় লঞ্চে ভাঙচুর চালায়। জানতে চাইলে পটুয়াখালী-৩ (দশমিনা গলাচিপা) আসনের সংসদ সদস্য এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এস এম শাহজাদা বলেন, আমি ইতিমধ্যে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ এবং বিআইডব্লিউটিএর  চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। লঞ্চ মালিকদের অনুরোধ করেছি জনগণকে তারা যেন জিম্মি না করেন। তবে এখনো আলোচনা চলছে আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান হবে। দশমিনা থানার ওসি  মো. মেহেদী হাসান জানান, একজন আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেফতারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। তবে লঞ্চ মালিকদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করছি যাতে দ্রুত লঞ্চ চালু করেন তারা। কারণ এ রুটে যাত্রীরা অনেক ভোগান্তিতে আছে। তবে দ্রুতই এটা সমাধান হবে বলেও জানান ওসি। তবে এ ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত দশমিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দশমিনা সদর ইউনিয়নের  চেয়ারম্যান ইকবাল মাহামুদ লিটন ঘটনাটিকে মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর