শুক্রবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

আমনের ভরা মৌসুমে চালের দাম নিয়ন্ত্রণহীন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

আমনের ভরা মৌসুমে রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলে চালের দাম নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে। ক্রেতা ও খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ হাতে গোনা কিছু অটো রাইসমিল ও মজুদদার সিন্ডিকেট করে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন। এ জন্য বাজার মনিটরিং ব্যবস্থাকেও দায়ী করা হচ্ছে। রংপুর মাহিগঞ্জ বাজারসহ বিভিন্ন চাল বাজারের খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েকদিন আগেও মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছিল ৫২ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে, বর্তমানে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬২ টাকার ওপর। নাজিরশাইল চালের দামও কেজিতে ৫ থেকে ৮ টাকা বেড়ে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভারতীয় আমদানি করা নূরজাহান চালের বস্তা বর্তমান বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ১০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নগরীর মাহিগঞ্জের চালের আড়তদাররা জানান, গত সপ্তাহে মিনিকেট চালের বস্তা ছিল ৩ হাজার টাকা, যার বর্তমান বাজার মূল্য ৩ হাজার ২০০ টাকা, ব্রিধান-২৮ (৮৪ কেজি) বস্তা ছিল ৩ হাজার ৩০০ টাকা, বর্তমান বাজার মূল্য ৩ হাজার ৫০০ টাকা, ব্রিধান-৪৯ চালের বস্তা ৩ হাজার ৬০০ টাকার স্থলে হয়েছে ৩ হাজার ৭৫০ থেকে ৩ হাজার ৮০০ টাকা।

 পাইজাম (৫০ কেজি) ২ হাজার ৩০০ টাকার স্থলে প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা, মোটা চালের মধ্যে গুটি স্বর্ণা (৮৪ কেজি) বস্তা ছিল ৩ হাজার ৪০০ টাকা, যা বর্তমান বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৬০০ টাকা। চালের এ অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পেছনে কারসাজি রয়েছে বলে মনে করছেন পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, ছোট ছোট হাসকিং মিল ও চাতালগুলো এখন আর চলে না। বড় অটো রাইস মিল মালিকরা কমদামে ধান কিনে মজুদ করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম নিয়ন্ত্রণ করছে। ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলের প্রায় ৬০০ অটোরাইস মিল মালিক নিজেদের ইচ্ছেমতো মজুদের পাহাড় গড়ে তুলে চালের দাম নিয়ন্ত্রণ করছে। অটোরাইস মিলগুলো লাখ লাখ মণ ধানের মজুদ করে নিজেদের ইচ্ছেমতো চালের দাম নির্ধারণ করছে। এ ছাড়া কিছু মজুদদার ব্যবসায়ীও চালের মজুদ করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। রংপুরের মাহিগঞ্জসহ দিনাজপুরের পুলহাট, বগুড়া, নওগাঁ ও রাজশাহী থেকে প্রতিদিন শত শত ট্রাক চাল ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। ক্ষুদ্র চাল ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, অটোরাইস মিলের মালিকরা চালের সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে বেশি দামে চাল বিক্রি করছে। ক্রেতা আবদুর রহিম কদিন আগে যে চাল ৪৪ টাকায় কিনেছি সেই চাল এখন ৬০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তিনি এ জন্য বাজার মনিটরিং ব্যবস্থাকে দায়ী করছেন। রংপুর চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, চালের দাম বৃদ্ধির জন্য অটোরাইস মিলগুলোকে দায়ী। অটো রাইসমিল মালিকরা আগে থেকে ধানের মজুদ গড়ে তুলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে অটোরাইস মিলগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা অসহায় হয়ে পড়েছে।

সর্বশেষ খবর