সেতু না থাকায় আট গ্রামের মানুষের ভরসা বাঁশের সাঁকো। ফলে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন শেরপুর সদর, নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলার সংযোগস্থলের আট গ্রামের মানুষ। এতে দুর্ভোগে পড়তে হয় চলাচলকারী মানুষের। এ অবস্থায় সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, পার্শ্ব এই তিন উপজেলার সংযোগ স্থল কলসপাড় ইউনিয়নের মালিঝি নদীর শাখা কলস নদের ওপরে যোগাযোগের জন্য রয়েছে একটি নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো। ওই এলাকার জনগণের উদ্যোগে তৈরি করা এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে হয় আট গ্রামের মানুষের। প্রতিদিন কমপক্ষে ১০-১২ হাজার মানুষ এই সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে আসছে। নদীর এক পাড়ে কলসপাড় ইউনিয়নে তিনটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, পশ্চিম কলসপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মোহাম্মাদিয়া কওমি মাদরাসা ও কলসপাড় নঈমী দাখিল মাদরাসা। এ ছাড়াও রয়েছে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র। এ ছাড়াও গ্রামগুলো হলো, পশ্চিম কলসপাড়, শিঙিমারী ও চকপাড়া গ্রাম এবং পার্শ্ববর্তী শেরপুর সদরের কাওয়াবিচি ও গেরামারী গ্রাম এবং ঝিনাইগাতী উপজেলার খাটোয়াপাড়া, গোয়ালপাড়া ও কানিপাড়া গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগের সংযোগস্থল হওয়ায় প্রায় ১০ হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত যাতায়াত করেন। এই বাঁশের সাঁকোতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয় শিক্ষার্থীদের। এতে হরহামেশাই ঘটে দুর্ঘটনা। রোগী থাকলে তো দুর্ভোগের মাত্রা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। কলসপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী অনন্যা বলেন, ‘এ সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে আমগর খুব কষ্ট অয়। একবার পা পিচলে পইড়াও গেছিলাম। এখন সাবধানে সাঁকোতে উঠি। এই হানে একটা ব্রিজ দিলে ভালো অইতো। পশ্চিম কলসপাড় গ্রামের রহমত আলী (৫০) বলেন, একটি সেতুর অভাবে ৩০ বছর ধরে জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে আছি। সব এলাকার উন্নয়ন হলেও আমাদের এখানে হয় না। শুধু একটি সেতুর অভাবে পিছিয়ে যাচ্ছি। গ্রামের কৃষক শাহজাহান মিয়া (৪৫) বলেন, সুস্থ মানুষ সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়ছেন। অসুস্থদের অবস্থা বলার মতো নয়। বেশি সমস্যা হয় প্রসূতিদের নিয়ে। নঈমী দাখিল মাদরাসার সুপার আবদুস সামাদ বলেন, সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হয় বলে শিক্ষার্থী নিয়মিত পড়তে আসে না। একটা মাত্র সেতুর অভাবে এলাকায় শিক্ষার হার অনেক পিছিয়ে আছে। কলসপাড় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, কলস নদের ওপর ব্রিজ নির্মাণ অতি প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট দফতরে সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবদুল হান্নান বলেন, সরেজমিনে পরিদর্শন করে সেতু নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
