শিরোনাম
রবিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

নওগাঁয় কীটনাশক ব্যবহারে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে কৃষক

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

নওগাঁয় কীটনাশক ব্যবহারে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে কৃষক

উত্তরাঞ্চলের শস্যভান্ডারখ্যাত নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় সচেতনতার অভাবে কৃষক জমিতে নিরাপদ কীটনাশক ব্যবহার না করায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। এ ব্যাপারে কৃষকদের সচেতন করার কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ। দিগন্তজুড়ে যেদিকে তাকায় শুধু সবুজ আর সবুজ। সবুজের সমারোহে যেন চোখ জুড়িয়ে যায়। ঋতু শরৎকে বিদায় দিয়ে হেমন্তকে বরণ করেছে প্রকৃতি। উপজেলার প্রতিটি মাঠজুড়ে ধানের শীষে পড়ছে শীতের শিশির বিন্দু। কৃষি প্রধান বাংলাদেশে মান্ধাতা আমলের চাষাবাদ পদ্ধতির পরিবর্তে সব ক্ষেত্রে আধুনিক যান্ত্রিক পদ্ধতির ব্যবহার এখনো প্রসার ঘটেনি। উপজেলার প্রতন্ত গ্রামগুলোতে জমি চাষে এখন পাওয়ার টিলারের ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেলেও অন্যান্য যন্ত্রপাতির তেমন ব্যবহার লক্ষ্য করা যায় না। ফলে কৃষক ফসলের চারা লাগানো আগাছা পরিষ্কারসহ ফসল কাটা মাড়াইয়ের কাজ কৃষি শ্রমিকের উপর নির্ভরশীল। ফসল প্রত্যঙ্গ রোগ বালাই থেকে রক্ষায় বিভিন্ন সময় কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। বেশি জমিতে এক সঙ্গে কীটনাশক প্রয়োগের ক্ষেত্রে পাওয়ার স্প্রে ব্যবহার করা হয়। কৃষক সাধারণত হ্যান্ড স্প্রে দিয়ে জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করেন। কীটনাশক প্রয়োগ করার সময় ম্যাক্স ও গ্লোবস ব্যবহার করার প্রয়োজন হলেও সচেতনার অভাবে কৃষক ও কৃষি শ্রমিক এগুলো ছাড়াই জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করেন। ফলে নাক ও মুখ দিয়ে বিষ দেহে প্রবেশ করে মাথা ঘোরাসহ নানা উপসর্গে ভোগেন কৃষকরা। কিন্তু এ ব্যাপারে গ্রামের কৃষক তেমন অবহিত নন।  জানা গেছে, গাছ বাড়ার জন্য ১৭টি মৌলিক পুষ্টি উপাদানের প্রয়োজন হয়। এসব পুষ্টি উপাদানের কিছু আসে পানি ও বাতাস থেকে। বাকি ১৪টি আসে মাটি থেকে। ১৯৫০ সালের পর থেকে মাটিতে মৌলিক পুষ্টি উপাদানের অভাব দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে আমাদের মাটির ৬-৭টি মৌলিক পুষ্টি উপাদানের অভাব দেখা দিয়েছে। আগামী ২০-৩০ বছর পর আরও ৩-৪টি পুষ্টি উপাদানের অভাব দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে বেশি ফলন পাওয়ার অভাব দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উপজেলার বজ্রপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ মন্ডল জানান, কীটনাশক জমিতে দেওয়ার সময় উদ্ভট গন্ধ সহ্য করতে হয়। এছাড়াও ওষুধ প্রয়োগের পর মাথা ঘোরাসহ নানা সমস্যা দেখা দেয় কিন্তু কিভাবে ওষুধ প্রয়োগ করলে কোনো সমস্যা হবে না তা আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে কখনো কেউ পরামর্শ দেয়নি। গ্রামের সব কৃষক এভাবেই জমিতে কীটনাশক প্রায়োগ করেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাউছার হোসেন জানান, প্রথমত আমরা কৃষককে কীটনাশক প্রয়োগ থেকে বিরত থাকারই পরামর্শ দিয়ে থাকি। আলোক ফাঁদের মাধ্যমে চাষাবাদের পরামর্শ দিয়ে থাকি। ওসমানি পদ্ধতিতে বিষ প্রয়োগের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। কৃষকরা জৈব সারের চেয়ে রাসায়নিক সার বেশি ব্যবহার করে। তবে জৈব সার ব্যবহারে কৃষকরা যাতে উদ্বুদ্ধ হয় তার জন্য আমরা কাজ করছি।

সর্বশেষ খবর