শনিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

স্বাধীনতার ৫০ বছরেও নির্মিত হয়নি বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভ

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

স্বাধীনতার ৫০ বছরেও নির্মিত হয়নি বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভ

মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর পূর্ণ হলেও এখনো নির্মিত হয়নি টাঙ্গাইলের সখীপুরের একটি বধ্যভূমির স্মৃতিচিহ্ন। ১৯৭১ সালের আগস্ট মাসের ১৬ তারিখে উপজেলার হাতিবান্ধা ইউনিয়নের টেকিপাড়া গ্রামে হাত-পা বেঁধে ও গুলি করে ১৬ জন সাধারণ হিন্দুকে হত্যা করে হানাদার বাহিনী। এই বধ্যভূমিতে কোনো স্থাপনা ও নিদর্শন না থাকায় অযত্ন ও অবহেলায় হারিয়ে যাওয়ার পথে এই বধ্যভূমি। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল সূত্রে জানা যায়, সেদিন ছিল হাতিবান্ধার কামালিয়াচালার হাটের দিন সোমবার। হানাদার বাহিনী ওই হাটের চতুর দিক দিয়ে ঘেরাও করে। পার্শ্ববর্তী মির্জাপুর উপজেলা থেকে আসা ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সাধারণ জনগণকে ধরে বাজার ঘেঁষা বিলের ধারে নিয়ে যায়। তারপর পিতা ও পুত্রসহ চার জনকে হাত-পা বেঁধে পানিতে ফেলে হত্যা করে হানাদার বাহিনী এবং স্থানীয় এক বাড়ির পাশে ঝোপের মধ্যে নিয়ে গুলি করে ১২ জনকে হত্যা করে তারা। সেদিন হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ হন হাতিবান্ধা এলাকার প্রভাত বাদ্যকর, তার ছেলে হুনু বাদ্যকর ও সুনাই বাদ্যকর এবং ওই এলকার রমেশ চন্দ্র সরকারের ছেলে নিতাই চন্দ্র সরকার, কাশিনাথ মন্ডলের ছেলে পূর্ণ চন্দ্র মন্ডল, যদু মোহন মন্ডলের ছেলে খোশি মোহন মন্ডল, চাকদহ গ্রামের গুরুদয়াল মন্ডলের মেয়ে সরস্বতী। মির্জাপুর উপজেলার মহেড়া ছাওয়ালী গ্রামের পাচু শাহার ছেলে প্রাণবল্লব শাহা, বোরন শাহার ছেলে কৃষ্ণপদ শাহা, হারাদন শাহার ছেলে গৌরপদ শাহা, হারাদন শাহার ছেলে অযুদ্ধা শাহা, যদু শাহার ছেলে গৌর শাহ, সুরেশ ঠাকুরের ছেলে তাপশ শাহা, সুরেশ ঠাকুরের ছেলে গৌর ঠাকুর, মাদব বণিকের ছেলে মধু বণিক ও কানাই বণিকের ছেলে গৌরচন্দ্র বণিক। হাতিবান্ধা ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নরেশ চন্দ্র সরকার বলেন, তখন ছিল বর্ষা মাস। প্রচ- বৃষ্টি আর ভয়ের কারণে তাদের লাশ সৎকার করেনি কেউ। যে কারণে লাশগুলো পচে-গলে পানিতে ভেসে গেছে। এ ঘটনার এক দিন পর সংবাদ পেয়ে এলাকায় এসে দেখি লাশগুলো পচে গন্ধ বের হচ্ছে। নিতাইচন্দ্র সরকারের বড় ভাই হরিদাস সরকার বলেন, আমার ভাইসহ ১৬ জন মানুষকে যেখানে হত্যা করা হয়েছিল সেখানে কোনো স্মৃতিচিহ্ন নেই। সেই শহীদদের কথা মনে করে ওইদিন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাব সে সুযোগটুকু এখনো হলো না। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এমও গনি বলেন, এই সখীপুরে বধ্যভূমি হলো দুটি। একটি কালিয়ান অন্যটি হাতিবান্ধার টেকিপাড়া। কালিয়ানের বধ্যভূমিতে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। হাতিবান্ধার টেকিপাড়া বধ্যভূমিতেও একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর