মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

ভাঙা সেতু মরণফাঁদ

আলপনা বেগম, নেত্রকোনা

ভাঙা সেতু মরণফাঁদ

নেত্রকোনার সীমান্ত উপজেলা কলমাকান্দায় সেতু নির্মাণের বছর ঘুরতে না ঘুরতেই যেন পরিণত হয়েছে মরণফাঁদে। ঠিকাদারের নিম্নমানের কাজের কারণে নির্মাণের দেড় বছরেই সেতুর দুই প্রান্ত দিন দিন ভেঙে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ভেঙে পড়ছে উভয় পার। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে সাধারণ মানুষ। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এলাকাবাসী মাটি ফেলে লাল নিশান টাঙিয়ে চলাচল করছে। কোটি কোটি টাকা খরচ করে স্থানীয় সরকারের (এলজিইডির) বাস্তবায়িত সেতুটি এলাকাবাসীর কাছে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নের শ্যামপুর বাজার এলাকার বুগাই শাখা নদীর ওপর ১১১ মিটার দৈর্ঘ্যরে ১৮ ফুট প্রশস্ত একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতু নির্মাণ শুরু এবং কবে শেষ হয়েছে এর সঠিক তথ্য ও অর্থ বরাদ্দ কোনোটাই দিতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। কাগজ পাওয়া যাচ্ছে না দীর্ঘদিন হয়ে গেছে এমন নানা অজুহাতে আনুমানিক তথ্য দিয়েছে। তবে আনুমানিক ব্যয় ১২ থেকে ১৩ কোটি বলে জানা গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, কোনো রকম দায়সারাভাবে কাজটি হয়েছে। জায়গার টাকাও পরিশোধ করেনি বলে জমিদানকারীরা অভিযোগ করেছেন। একটি সেতু নির্মাণ করা হয় ৫০ অথবা ১০০ বছরের হিসাব ধরে। ঠিকাদার এবং প্রকৌশল অধিদফতরের পেট ভরেছে। মাঝখান থেকে সরকারের টাকা গচ্চা গেছে। এদিকে এলাকাবাসী মরণ মাথায় নিয়েই ঘুরছে। গত ২৮ নভেম্বর রাতে সেতুটির গর্তে পড়ে তিনজন মোটরসাইকেল আরোহী গুরুতর আহত হয়ে এখনো ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আর এ দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা নিজ উদ্যোগে ওই স্থানে একটি লাল নিশান টাঙিয়ে দিয়েছেন। সংশ্লিষ্টদের কোনো খবর নেই। স্থানীয় সাইফুল ইসলাম আকন্দ ও শহীদ মিয়াসহ পথচারীরা আরও জানান, লুটপাট করতেই সেতু করা হয়েছে। সেতুটির পূর্বদিকের শেষ প্রান্তে বালু সরে গিয়ে বিশাল এক গর্তের সৃষ্টি হয়। পশ্চিম দিকের গার্ডার ও সেতু রক্ষা বাঁধও ভেঙে গেছে। যে কারণে ১৫টি গ্রামের প্রায় অর্ধলাখ মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এদিকে ফেসবুকে সেতুর ছবি ছড়িয়ে পড়ায় পরিদর্শনে আসা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ইমরান হোসেন জানান, কাজ ভালো হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে অ্যাপ্রোচ সড়ক ভেঙেছে। অচিরেই মেরামত করা হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন। তিনি আরও জানান, গত ১৫/১৬ অর্থবছরে কাজটি টেন্ডার হলে অসীম সিংহ বিপ্লব অথবা দিপংকর নামে ঠিকাদার কাজটি করেছেন। অনেক দিন হয়ে যাওয়ায় নাম-ঠিকানা সঠিক বলা যাচ্ছে না। তবে ২০১৮-তেই কাজটি বুঝিয়ে দিয়েছে ঠিকাদার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর