মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

লটারির পরও ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে না ৫০ শিক্ষার্থী

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরের দুটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির জন্য প্রকাশিত ফলাফলে নির্বাচিত ৫০ শিশু শিক্ষার্থী              জীবনের শুরুতেই পড়েছে স্বপ্নভঙ্গের আশঙ্কায়! গতকাল অভিভাবকরা এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়েছেন। তবে নাটোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মতিন বিষয়টি সুরাহার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে আবেদন করেছেন। জেলা প্রশাসক মো. শামীম আহমেদও বিষয়টি সুরাহার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন। জানা গেছে, নাটোর শহরের দুটি বিদ্যালয়েই তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির জন্য ১২০ জন করে শিশু শিক্ষার্থী লটারির মাধ্যমে বাছাই করে। ঢাকাসহ সারা দেশের অন্য বিদ্যালয়ের মতোই কেন্দ্রীয়ভাবে গত ১৫ ডিসেম্বর ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

 শনি ও রবিবার নাটোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রকাশিত ফলাফলে নির্বাচিতদের ভর্তি ফরম সংগ্রহ করে পরের দিন ভর্তি হতে বলা হয়। শনি ও রবিবার অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে ভর্তি ফরম নিতে গিয়ে প্রায় ২৮ জন অভিভাবক জানতে পারেন তাদের সন্তানের বয়স আট বছর পূর্ণ না হওয়ায় তাদের ভর্তি ফরম দেওয়া হবে না, ভর্তিও নেওয়া হবে না। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আবদুল মতিন বলেছেন সরকারের দেওয়া নীতিমালায় তাদের বয়স আট বছর না হওয়ায় এসব শিক্ষার্থীকে ভর্তি নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এদের মধ্যে ১৭ জন অভিভাবক শনিবার যৌথভাবে একটি আবেদনে স্বাক্ষর করে এসব শিশু শিক্ষার্থীদের জীবনের শুরুতেই স্বপ্নভঙ্গের আশঙ্কা থেকে বাঁচানোর জন্য রবিবার নাটোর জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিতভাবে আবেদন জানিয়েছেন। অপরদিকে নাটোর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হারুন অর রশীদ ২২ ও ২৩ ডিসেম্বর তার বিদ্যালয়ে নির্বাচিতদের ভর্তি ফরম সংগ্রহ করে পরের দিন ভর্তির আহ্বান জানিয়ে যে নোটিস প্রকাশ করেছেন তাতে পরিষ্কারভাবে লিখে দিয়েছেন- আট বছরের নিচে কাউকে ভর্তি করা হবে না। এই স্কুলের নির্বাচিতের তালিকায়ও আট বছর পূর্ণ না হওয়া ২৬ জন শিশু শিক্ষার্থী রয়েছে বলে জানা গেছে। এসব অভিভাবকরা বলছেন, তাদের অনেকের সন্তানের বয়স আট বছর থেকে কারো একদিন, দুইদিন বা এক সপ্তাহ মাত্র কম। তবুও তাদের ভর্তি নেয়া হচ্ছে না। ভর্তি যদি না নেয়া হয় তাহলে তাদের নির্বাচিত করা হলো কেন? লটারির সময় কম বয়সীদের বাদ দিলেই কারো কোনো আপত্তি ছিল না। নির্বাচিত শিশুদের ‘অভিনন্দন আপনি নিু লিখিত বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লিখে ম্যাসেজ পাঠিয়ে অভিনন্দন জানিয়ে এখন ভর্তি না নিলে তারা মানসিক বিপর্যয়ে পড়বে বলেও অভিভাবকরা আবেদন পত্রে উল্লেখ করেছেন। সারাদেশের প্রতিটি বিদ্যালয়েই এই সমস্যা রয়েছে জানিয়ে তা সমাধানের জন্য অভিভাবকরা দাবি জানিয়েছেন। নাটোর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আখতার হোসেন বলেছেন, জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা না বলে তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন না। অপরদিকে নাটোর জেলা প্রশাসক মো. শামীম আহমেদ বলেছেন, লটারির মাধ্যমে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির জন্য প্রকাশিত ফলাফলে নির্বাচিত এসব শিশু শিক্ষার্থীদের জন্য বিষয়টি বেদনার। তারা নির্বাচিত হওয়ার খবরে যেমন উচ্ছ্বসিত হয়েছিল এখন ততটাই হতাশায় পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর