কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম আনন্দপুর। এই গ্রামসহ আশপাশের এলাকায় বাঁশ-বেতের নান্দনিক শোপিস তৈরি হচ্ছে ৬৫ বছরের বেশি সময় ধরে। এখানকার বাঁশ বেতের শোপিস শোভা পাচ্ছে ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলের বাসা-অফিসের দেয়ালে। শোপিসের মধ্যে রয়েছে ফুলদানি, কলমদানি, ওয়ালমেট, টেবিল ল্যাম্প, ফটো ফ্রেম, ডেস্ক ক্যালেন্ডার, টেবিল মেট, দরজার পর্দা। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আনন্দপুর গ্রামের এক বাড়ির উঠানজুড়ে ওয়ালমেট। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দৃশ্য সম্বলিত ওয়ালমেটগুলো রোদে শুকানো হচ্ছে। পাশে কাজ করছেন উদ্যোক্তা শাহ জামাল। বাঁশ ও সুতা দিয়ে তৈরি ওয়ালমেটে ফুল পাখি আর প্রকৃতিকে ফুটিয়ে তুলছেন। আরেক কক্ষে কাজ করছেন সাইফুল ইসলাম, ডালিয়া আক্তারসহ কয়েকজন। কলমদানি আর ফুলদানি তৈরি করতে বাঁশগুলোকে ছোট টুকরো করে কাটা হয়েছে। আগুন দিয়ে সেঁক দেওয়া হচ্ছে। সেই বাঁশ ঘষে পরিষ্কার করা হয়। তার ওপর করা হয় নানা রঙের ডিজাইন। কুমিল্লা আর্টস অ্যান্ড ক্রাফটসের স্বত্বাধিকারী শাহ জামাল বলেন, ১৯৫৫ সাল থেকে তারা এই শোপিস তৈরি করেন। আনন্দপুর, জঙ্গলবাড়ি, খারেরাসহ কয়েক গ্রামে এক সময় ২৫০-এর বেশি পরিবার এই পেশায় জড়িত ছিল। বর্তমানে ৮-১০টি পরিবার এই পেশার সঙ্গে আছে। পেশা বিমুখ হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি দায়ী করেন প্লাস্টিকের আধিক্যকে। শাহ জামাল বলেন, বর্তমানে শোপিসের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। দক্ষ জনবলের অভাবে পণ্য তৈরি করতে পারছেন না। কুমিল্লা ও ঢাকার কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের পণ্য ইউরোপ-আমেরিকায় যাচ্ছে। কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শাহাদাত হোসেন বলেন, কুটির শিল্পী শাহ জামালকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি। তিনি পরিশ্রমী উদ্যোক্তা। তার কাজ এগিয়ে নিতে আমরা সহযোগিতা করব।