বুধবার, ৫ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

সদর হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া নবজাতক উদ্ধার

দিনাজপুর প্রতিনিধি

সদর হাসপাতাল থেকে চুরি  হওয়া নবজাতক উদ্ধার

দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালে ভূমিষ্ঠ হওয়া নবজাতক শিশুকন্যা হাসপাতালের গাইনি বিভাগ থেকে চুরির ২০ ঘণ্টা পর উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শিউলি আরা নামে এক নারীকে আটক করা হয় এবং ওই প্রসূতির বোন হাজেরা বেগমকে জিঙ্গাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে বলে জানান কোতোয়ালি থানার ওসি মোজাফ্ফর হোসেন। আটক শিউলি আরা (৩৫) দিনাজপুর সদর উপজেলার শেখপুরা ইউনিয়নের জয়দেবপুর বালাপাড়া এলাকার মোস্তাফিজারের স্ত্রী। এ ঘটনায় এর আগেই নবজাতকের বাবা আবদুল লতিফ বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। গত সোমবার দুপুরে হাসপাতালের গাইনি বিভাগ থেকে প্রসূতি জাহেদা বেগমের নবজাতক শিশুকন্যা চুরি হয়ে যায়। এরপর পুলিশের জোর তৎপরতায় গতকাল সকাল ১০টায় সদর উপজেলার শেখপুরা ইউনিয়নের জয়দেবপুর বালাপাড়া এলাকা থেকে ওই নবজাতককে উদ্ধার করা হয়। গতকাল দুপুরে উদ্ধারকৃত ওই নবজাতককে হাসপাতালে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেন দিনাজপুর পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কোতোয়ালি থানার ওসি মোজাফ্ফর হোসেন, ডিবির ওসি মোস্তাফিজুর রহমান, পুলিশ পরিদর্শক আসাদুজ্জামান হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. পারভেজ সোহেল রানা প্রমুখ। এ সময় পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে ওই নবজাতকের মায়ের হাতে বিভিন্ন ধরনের ফলমূলও তুলে দেওয়া হয়।

 এ সময় দিনাজপুর পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে উদ্ধার অভিযান চালায় পুলিশ। চুরি হওয়ার ২০ ঘণ্টার পর ওই নবজাতককে উদ্ধার করতে সক্ষম হই। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। আমরা শিউলি আরা নামে একজনকে আটক করেছি। প্রথম স্বামীর সংসার ভেঙে যাওয়ার পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন শিউলি। প্রথম স্বামীর ঘরে সন্তান থাকলেও দ্বিতীয় স্বামীর ঘরে সন্তান না হওয়ায় সংসার ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে তিনি এ কাজ করেন। সন্তানকে ফিরে পেয়ে ওই নবজাতকের মা জাহেদা বেগম বলেন, আমার বাচ্চাকে ফিরে পেয়ে ভালো লাগছে। পুলিশ স্যারেরা কষ্ট করে আমার বাচ্চা কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন এ জন্য ধন্যবাদ। আর যে আমার বাচ্চাকে চুরি করেছিল তার বিচার চাই। উল্লেখ্য, সোমবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালে ওই শিশুটির জন্ম হয়। জন্ম নেওয়া শিশুকন্যার মা প্রসূতি জাহেদা বেগম (৩৬) দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার মাহাদানী গ্রামের আবদুল লতিফের স্ত্রী। প্রসব ব্যথা উঠলে গত রবিবার জাহেদাকে দিনাজপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার সকালে একটি শিশুকন্যা জন্ম দেন তিনি। দুপুরের পর তার প্রস্রাবের চাপ হলে নবজাতক শিশুকন্যাকে তার বোন হাজেরা বেগমের কাছে রেখে যান। এ সময় অজ্ঞাত এক নারী হাজেরাকে বলে, অসুস্থ বোনকে প্রস্রাব করাতে নিয়ে যান। শিশুকন্যাকে আমাকে দেন। হাজেরা বেগম সরল বিশ্বাসে নবজাতক শিশুকন্যাকে ওই নারীর কাছে দিয়ে প্রসূতি বোনকে প্রস্রাব করাতে টয়লেটে নিয়ে যান। টয়লেট থেকে ফিরে এসে দেখেন ওই অজ্ঞাত নারীটি নবজাতক শিশুকে নিয়ে উধাও। প্রসূতি মাতা জাহেদা বেগম তার নবজাতক শিশুকন্যাকে ফিরিয়ে দিতে চিৎকার করে কান্নাকাটি শুরু করলে চুরির ঘটনা ফাঁস হয়। এরপর খোঁজাখুঁজি করেও সন্তানটি না পাওয়ার পর বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. পারভেজ সোহেল রানা জানান, বিষয়টি জানার পর পুলিশকে জানানো হয়েছে। সোমবার রাতেই পুলিশের বিভিন্ন টিম শিশুটিকে উদ্ধারে হাসপাতালের সিসি ফুটেজ থেকে শনাক্ত করে এবং তৎপর হয়ে ওঠে।

সর্বশেষ খবর