বুধবার, ৫ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

‘ধান শেষ করছে, অহনা আত্তির চোক পড়ছে হরু খেতে’

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি

‘ধান শেষ করছে, অহনা আত্তির চোক পড়ছে হরু খেতে’

খেতের সব ধান খাইয়ারছে, অহনা চাল কিন্না ভাত খাইতাছি। চাইড্ডা হরু (সরিষা) লাগাইছি অহন তাতেও আত্তির (হাতি) চোক পড়ছে। দুই দিন ধইরা আত্তি নামছে। রাইত-দিন হরু খেত পহরা দিতাছি। রাইতে আগুন জালাইয়া বুড়া-বুড়ি এই খেতে পইড়া থাহি। কথাগুলো বলছিলেন শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার পানিহাটা গ্রামের নুর বানু বেগম (৫০)। গত দুই দিন ধরে হাতির দল আবারও পাহাড়ি অঞ্চলে খাবারের সন্ধানে ভারতের মেঘালয়ের পাহাড় থেকে নেমে আসছে উপজেলার পানিহাটা এলাকায়। গত সোমবার সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার পানিহাটার সীমান্তবর্তী ভারত অংশের একপাশে ২২-২৩টি হাতি দল বেঁধে পাহাড়ে অবস্থান করছে। অপরদিকে পানিহাটার বাংলাদেশ অংশে ২০-২৫ জন ঢিল ও গাছের ভাঙা ডাল হাতির দিকে ছুড়ে মারছে। হাতির দল যখন তেড়ে আসে তখন স্থানীয়রা পিছিয়ে যায়। স্থানীয়রা যখন হাতি দলের ওপর ঢিল ছোড়ে তখন হাতিগুলো পিছু হটে। হাতি ও মানুষের চোর-পুলিশ খেলা চলে দুপুর থেকে প্রায় সন্ধ্যা পর্যন্ত। এলাকাবাসী জানান, এখন যদি হাতির দলকে না তাড়াই, তাহলে এ সরিষা খেত খেয়ে ফেলবে। আর রাতে বাড়িতে হামলা করতে পারে। তাই গ্রামবাসী মিলে হাতি তাড়াতে এসেছি। জানা যায়, দুই দিন ধরে বন্যহাতির দল অবস্থান করছে ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা মেঘালয় রাজ্যের চেরেংপাড়া পাহাড়ি অঞ্চলে। এ হাতি খাবারের সন্ধানে নালিতাবাড়ী উপজেলার পানিহাটা এলাকায় নেমে আসছে আবাদি জমি ও লোকালয়ে। সবশেষ গত ডিসেম্বরে পানিহাটা এলাকার কৃষক হাসমত আলীর বাড়িঘরে হামলা করে। এ ছাড়া গত নভেম্বরে হাতির অত্যাচারে পানিহাটায় প্রায় ৪০-৪৫ একর জমির পাকা আমন খেত নষ্ট হয়েছে। পানিহাটা এলাকার এলিফেন্ট রেসপন্স টিমের সভাপতি যোসেফ মারাক বলেন, হাতি যখন দলবেঁধে লোকালয়ে নেমে আসে তখন রাত জেগে পাহারা দিয়েও রক্ষা হয় না। এ বিষয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

শেরপুর বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুমন সরকার জানান, বন্যহাতির আক্রমণ থেকে জান মাল রক্ষায় আমরা সচেতন আছি। নিয়মিত টহল ও সচেতনতামূলক সভা করা হচ্ছে। বন্যহাতির দলকে উত্ত্যক্ত না করার পরামর্শ দেন তিনি।

সর্বশেষ খবর