মঙ্গলবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

শীতে কাতর তিস্তা পাড়ের মানুষ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

শীতে কাতর তিস্তা পাড়ের মানুষ

হিমেল হাওয়ায় আর ঘন কুয়াশায় কাতর লালমনিরহাটের তিস্তা পাড়ের মানুষ। দুই দিন থেকে জেঁকে বসে আছে শীত। প্রতি দিনই কমছে তাপমাত্রা। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় জবুথবু জনজীবন। হঠাৎ শীত বেড়ে যাওয়ায় কাবু খেটে খাওয়া মানুষ, শিশু ও বৃদ্ধরা। নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল দুপুর ১২টায় সূর্যের দেখা মিললেও সেই সঙ্গে বেড়েছে কনকনে ঠান্ডা। এতে কাবু হয়ে পড়েছে তিস্তা পাড়ের শিশু-বৃদ্ধ সবাই। তিস্তা পাড়ের মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। এদিকে গতকাল সকালে সদর হাসপাতালে নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে ছয় মাসের শিশু শিউলির মৃত্যু হয়েছে। শিশুটি সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের চরকুলাঘাটের রায়হান মিয়ার মেয়ে। লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আশরাফুল আলম দোলন শিশু মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবলচন্দ্র জানান, গতকাল সকালে লালমনিরহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। ঠান্ডা বাতাসে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। গত দুই দিনে বেড়েছে শীত। শহরের বাইরে পুরো এলাকা রয়েছে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে তিস্তা পাড়ের ৬৩ চরের খেটে খাওয়া মানুষ। হাড় কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন। বিশেষ করে তিস্তা-তীরবর্তী এলাকার মানুষের ভোগান্তি চরমে। শীতে খেটে খাওয়া মানুষ কাজকর্ম না পেয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। গত চার দিনে শীতে তিস্তা পাড়ের হতদরিদ্র মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। হাঁপানি, অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, হার্টসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালগুলোয় বাড়ছে রোগী। গবাদি পশুও রেহাই পাচ্ছে না শীতের প্রকোপ থেকে। দহগ্রামের বাসিন্দা রব্বু মিয়া বলেন, ‘হামার এদিক খুব ঠান্ডা, এই ঠান্ডায় ঘর থাকি বেড়ার মান চায় না। দুই দিন ধরি কাজতও যাই না। যে শীত কবে যে যায়। এই শীতে কষ্টে আছি।’ কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী শোইলমারী গ্রামের আকবার আলী বলেন, ‘তিস্তার চরে শুধু হুহু করি বাতাস নাগে। দুই দিন ধরি হামাগুলার অবস্থা খারাপ। ঘুম থাকি উঠি খড়, খড়ি জড় করি আগুন পোয়াচ্ছি। এই চরত কাহো কম্বল ধরি আইসে না।’

 

সর্বশেষ খবর