সোমবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

নাটোরে অবৈধ বালু তোলার মহোৎসব

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরে অবৈধ বালু তোলার মহোৎসব

একদিকে ভাঙন ঠেকাতে নেওয়া হচ্ছে রক্ষা প্রকল্প, অপরদিকে বালু তোলার মহোৎসব। নেই নজরদারি, নিয়ম, নীতির কোনো তোয়াক্কা। অবৈধভাবে বালু তোলার কাজ চলমান থাকলেও নীরব প্রশাসন। যেনতেন ভাবে চলছে ড্রেজার ও বলগেডের ছড়াছড়ি। আইনকে তোয়াক্কা না করেই এক শ্রেণির বালু ব্যবসায়ী হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। হুমকির মুখে নদীপারের বসতবাড়ি স্থাপনা। সরকারি নিয়ম তোয়াক্কা না করে নাটোরের লালপুরে প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রকাশ্যে দিবালোকে পানিশূন্য পদ্মা নদীর তলদেশ থেকে ভেকু দিয়ে অবৈধ ভাবে বালু তোলার মহোৎসব চলছে। এ ছাড়া রাতের অন্ধকারে যানবাহনে করে বালু-ভরাট তোলার মাধ্যমে হরিলুট করে বিক্রয়ের হিড়িক লেগেছে। পানিশূন্য পদ্মা নদীর তলদেশ থেকে এভাবে বালু-ভরাট তোলা হলে লালপুর সদরে কলোনিতে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রায় ৫০টি বাড়ি, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, থানা, লালপুর সদর বাজারসহ ১০টি গ্রাম হুমকির মধ্যে নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি প্রবাহিত হলে ভাঙনে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে শূন্য পানির পদ্মা নদীর তলদেশ থেকে অবৈধভাবে বালু-ভরাট লুট করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে অবৈধ দখলদার। এতে সরকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। গত ১৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও থানাসহ লালপুর সদর বাজারের পাশ দিয়ে পানিশূন্য পদ্মা থেকে ভেকু দিয়ে বালু-ভারাট তুলতে দেখা গেছে। ভেকু চালক বলে আপনারা রানা সরদারের সঙ্গে কথা বলুন। এর একটু পরই বালু-ভরাট তোলার পরিচালনা ও বিক্রি করার ম্যানেজার এসে বলেন বৈধভাবে বালু-ভরাট তোলা হচ্ছে। এইটা বৈধ ব্যবসা তাই দিনেই বালু-ভরাট করে রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অবৈধভাবে বালু-ভরাট তুললে থানার পুলিশ এখানে এসে বালু-ভরাট তোলা বন্ধ করে দিত। ওই ম্যানেজার  আরও বলেন, অবৈধভাবে বেশ কয়েকটি স্থানে রাতে বালু-ভরাট তোলা হচ্ছে। এ বিষয়ে স্থানীয়রা জানান, রানা সরদার একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ দেওয়ার সাহস আমাদের নেই এবং ভরাট ও তোলা নিয়ে কোনো কথা বলতে চাচ্ছি না। এ বিষয়ে পাবনা জেলার সাঁড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমদাদুল হক রানা সরদার বলেন, ২ লাখ ৯ হাজার সিপ্টি বালু ফেলানো আছে। এই বালু উঠে গেলে আর বালু উঠাব না। এ ছাড়া তার পাশে ১০ লাখ সিপ্টি বালু খামাল দেওয়া আছে। লালপুর থানার ওসি ফজলুর রহমান বলেন, আমার জানা মতে কোনো জায়গায় বালু-ভরাট ও তোলা হচ্ছে না। ঠিকাদার তার ব্যবসা ও রাস্তার কাজে ব্যবহারের জন্য আলাইপুর থেকে বালু এনে রেখেছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীমা সুলতানা বলেন, বালু-ভরাট উত্তোলনের কোনো প্রকার অনুমোদন দেওয়া নাই। তিনি আরও বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক বালু-ভরাট উত্তোলন বন্ধ করার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর