শনিবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

ছয় মাসে ১২৪ ট্রান্সফরমার চুরি

জয়পুরহাট প্রতিনিধি

জয়পুরহাটে গত ছয় মাসে ১২৪টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সেচ পাম্প মালিকরা। জেলার পাঁচ উপজেলার কৃষকদের বিভিন্ন মাঠ থেকে চুরি হয়েছে এসব ট্রান্সফরমার। একটিও উদ্ধার না হওয়ায় কৃষকরা বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার এনামুল হক প্রামাণিক সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

ও বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএর) নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল ইসলামের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, কৃষি জমিতে সেচের জন্য পাঁচ উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের ১ হাজার ৮৭৫টি গভীর, ৩ হাজার ৪৯৩টি অগভীর ও দুটি এলএলপি নলকূপ রয়েছে। আর বিএমডিএর গভীর নলকূপ রয়েছে ৩৫৯টি। জেলায় এসব বিদ্যুৎ চালিত নলকূপের জন্য ট্রান্সফরমার রয়েছে প্রায় ৮ হাজার। ২০২১ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে চুরি হয়েছে ১২৪টি ট্রান্সফরমার। এর মধ্যে পল্লী বিদ্যুতের ১০৩ ও বিএমডিএর ২১টি। জানা যায়, ট্রান্সফরমার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সেচ পাম্প অপারেটরদের প্রতি ঘণ্টার জন্য শতকরা ১০ টাকা কমিশন দেওয়া হলেও চুরি ঠেকানো যায়নি। প্রতিটি ট্রান্সফরমার চুরি হওয়ার পর সেচ পাম্প মালিকদের মাধ্যমে থানায় অভিযোগ বা সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। কিন্তু কোনো ট্রান্সফরমার উদ্ধার বা অপরাধী গ্রেফতার হয়নি। চুরি হওয়া সেচ পাম্পের ট্রান্সফরমার উদ্ধার না হওয়ায় পুনরায় সেচ পাম্প মালিকদের ট্রান্সফরমার কিনতে হয়েছে। চুরি হওয়া ট্রান্সফরমার উদ্ধার না হওয়া এবং দোষীরা আইনের আওতায় না আসায় আরও চুরি আতঙ্কে রয়েছেন পাম্প মালিকরা। মূল্যবান তামার তারের জন্যই সেচ পাম্পগুলো চুরি হচ্ছে বলেও জানান স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ ও বিএমডিএর ওই দুই কর্মকর্তাসহ পাম্প মালিকরা। ট্রান্সফরমার চুরি বন্ধে পুলিশসহ প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে জানান, ভুক্তভোগী অনেক পাম্প মালিক। জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার এনামুল হক প্রামাণিক ও বিএমডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল ইসলাম বলেন, চোর ধরা তাদের পক্ষে সহজ কাজ নয়। তাই প্রতিটি পাম্প মালিক ও কৃষকের সমন্বয়ে পাহারা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। জয়পুরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম জানান, ট্রান্সফরমার চুরির পর মামলা হলে তদন্তের জন্য বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। তখন অপরাধী শনাক্ত ও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শুধু সাধারণ ডায়েরি বা অভিযোগ দেওয়া হয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কম গুরুত্ব দেওয়া হয়। এ কারণে অপরাধীরাও পার পেয়ে যাচ্ছে।

 

সর্বশেষ খবর