শিরোনাম
রবিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

বৃষ্টি ও রোগবালাইয়ে বিপাকে আলু চাষিরা

জুন্নু রায়হান, ভোলা

বৃষ্টি ও রোগবালাইয়ে বিপাকে আলু চাষিরা

অপরিপক্ব আলু তুলছেন চাষিরা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ভোলায় চলতি মৌসুমে প্রচুর আলু আবাদ হয়েছে। অসময়ের বৃষ্টি এবং রোগবালাইয়ের আক্রমণের কারণে অপরিপক্ব আলু তুলে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন চাষিরা। ফলে আলুর বাম্পার ফলনের আশা করেলও এখন লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা। খেতের নিবিড় পরিচর্যা করলে চাষিরা অধিক লাভবান না হলেও লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে দাবি করছে কৃষিবিভাগ। ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের গুপ্তমুন্সি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, দিগন্তজুড়ে আলুর আবাদ। ফলনও হয়েছে আশানুরূপ। আর এক মাস পর পরিপক্ব আলু তোলার কথা। কিন্তু মাঠে নেমে দেখা যায় কোথাও কোথাও আলু গাছের পাতা বিবর্ণ হয়ে কুঁকড়ে যাচ্ছে। চাষিরা বলেন, অসময়ে অত্যধিক বৃষ্টি হয়েছে। খেতের কোথাও কোথাও পানি জমে গেছে। যেখানে দুই-তিন দিন পানি জমে ছিল সেখানকার আলুগাছ মরে যাচ্ছে। দুই-চারটি গাছ তুলে দেখা যায় অধিকাংশ আলু অপুষ্ট। কোনো কোনো আলুর গায়ে কালো দাগ পড়েছে। কৃষি বিভাগ জানায়, গত ডিসেম্বর মাসে ভোলায় কৃষকরা আলু আবাদ শুরু করেন। মার্চের মাঝামাঝি ফলন পাওয়ার কথা। কৃষকরা বলেন, আলু আবাদের শুরুতে এক দফা বৃষ্টিতে তাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। সেই ক্ষতি কাটিয়ে আলু গাছে যখন ফলন আসতে শুরু করে তখন দ্বিতীয় দফা বৃষ্টি হয়। এতে নিচু জমির আলু খেতে বৃষ্টির পানিতে ভাইরাসজনিত নানা রোগ দেখা দেয়। অনেক খেতের পাতা লালচে হয়ে গেছে। আবার কোনো কোনো খেতে আলুর পচন দেখা দিয়েছে। আলু পরিপক্ব হওয়ার আগেই খেত থেকে তুলে নিচ্ছেন চাষিরা। ফলে দামও পাচ্ছেন অনেক কম। এমন পরিস্থিতিতে যারা ঋণ নিয়ে আলুর আবাদ করেছেন তাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। আলু বিক্রি করে চালান না উঠলে কীভাবে ঋণ পরিশোধ করবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। ভোলা জেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান ওয়ারিসুল কবির বলেন, গত বছর কৃষকরা আশানুরূপ আলুর ফলন পেয়েছিলেন। তাই এ বছর অধিক আবাদ করেছেন। কিন্তু বৃষ্টির কারণে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা। কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী পরিচর্যা করলে কৃষকরা লোকসানে পড়বেন না বলে আশা করা হচ্ছে। কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, গত বছর ভোলা জেলায় পাঁচ হাজার ৩৫ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছিল। উৎপাদন হয়েছিল এক লাখ ১৯ হাজার ৯৩৩ মেট্রিক টন। এ বছর আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল পাঁচ হাজার ২২০ হেক্টর। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত প্রায় ৩০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে।

সর্বশেষ খবর