শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৩ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

এনআইডি সংশোধনে ভোগান্তি

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

এনআইডি সংশোধনে ভোগান্তি

মৌলভীবাজার নির্বাচন অফিসে সেবাগ্রহীতাদের ভোগান্তির অন্ত নেই। এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) কার্ডের নাম, বয়স, জন্মস্থান ও জন্ম তারিখ সংশোধন এবং নতুন ভোটার হতে লাগামহীন দুর্ভোগ ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন জেলাবাসী। এসব সংশোধন করতে ৫ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়। নির্বাচন অফিসগুলোয় ঘুষ প্রদান অনেকটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ঘুষ ছাড়া কাজ করেন না সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। টাকা দিলেই নিয়মকে অনিয়মে পরিণত করতে পারেন তারা। ভুলের মাত্রা অনুযায়ী টাকার পরিমাণও নির্ধারণ করেন। এদিকে নির্বাচন অফিস কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী দালাল চক্র। অনেক সময় কর্মকর্তারা সরাসরি না নিয়ে দালালদের মাধ্যমে ঘুষ নেন। জানা যায়, এ জেলার উপজেলা নির্বাচন অফিসগুলোয় সরকারের দেওয়া কোনো নির্দেশনাই পালন হচ্ছে না। কর্মকর্তারা তাদের খেয়ালখুশি-মতো অফিস চালান। এনআইডি কার্ড সংশোধনে যারা কর্মকর্তাদের চাহিদা অনুযায়ী ঘুষ দেন তাদেরই কাজ হয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর হেলাল উদ্দিনের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী দালাল চক্র। হেলাল উপজেলা পরিষদ গেটের সামনে তার ছেলে সৌরভ আহমদকে দিয়ে ‘বিসমিল্লাহ কম্পিউটার’ নামে একটি দোকান বসিয়েছেন। সাধারণ সেবাগ্রহীতারা নির্বাচন অফিসে গেলে হেলাল ও অন্য স্টাফরা বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে বিসমিল্লাহ কম্পিউটার দেখিয়ে দেন এবং বলেন সেখানেই সবকিছু করতে পারবেন। ওই দোকানটি কেন্দ্র করে প্রতিনিয়ত অনৈতিক লেনদেন হয়। সূত্র আরও জানান, সরকারিভাবে প্রতি মাসে এক দিন নতুন ভোটারদের ছবি তোলার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু কর্মকর্তাদের চাহিদা অনুযায়ী ঘুষ দিলে যে কোনো দিন ছবি তোলা যায়। সংশোধনের মাত্রা অনুযায়ী টাকার পরিমাণ নির্ধারণ হয়। তবে প্রবাসী বুঝতে পারলে কর্মকর্তারা টাকার পরিমাণ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেন। কুলাউড়া নির্বাচন অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেখানে টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয় না। নাম কিংবা জন্ম তারিখ সংশোধনের ক্ষেত্রে ৫ হাজার থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়। নির্বাচন অফিসার আহসান ইকবাল সময়মতো অফিসে আসেন না। সূত্র বলছেন, অধিকাংশ দিন বিকাল ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত অফিস করেন। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে সাধারণ সেবাগ্রহীতারা অফিস সময়ে এসে কর্মকর্তাকে না পেয়ে ফেরত যান। ঘুষ সিন্ডিকেট পরিচালিত হয় অফিস সহকারী আনোয়ারের নেতৃত্বে। নাম গোপন রাখার শর্তে কুলাউড়া উপজেলার এক সেবাগ্রহীতা বলেন, তার বাবার এনআইডি কার্ডে ‘মোহাম্মদ’ সংশোধন করতে গেলে ৪৫ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন আনোয়ার। পরে তিনি সিলেট নির্বাচন অফিস থেকে ওই এনআইডি কার্ড সংশোধন করান। পরে ওই ব্যক্তিকে নতুন ভোট হওয়ার জন্য ৫ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রবাসী সিরাজ মিয়া ৫ হাজার টাকা দিয়ে তার নামের ভুল সংশোধন করান। এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, ‘এ পর্যন্ত আমার কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ দেননি।

তাই ওই অভিযোগগুলোকে আমি মিথ্যাই বলব। তবে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর