বৃহস্পতিবার, ৩ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

মেহেরপুরে ফসলি জমির মাটি কেটে সড়কে

মেহেরপুর প্রতিনিধি

মেহেরপুরে ফসলি জমির মাটি কেটে সড়কে

সড়কের পাশের জমি থেকে ৭ থেকে ৮ ফুট গভীর গর্ত করে ফসলসহ মাটি কেটে নিয়ে রাস্তায় দিচ্ছেন ঠিকাদার। এ মাটি কাটায় কোনো কোনো কৃষকের কাঁচা ধান খেত, কলাবাগান, লিচু বাগান বিলীন হয়ে গিয়েছে। মেহেরপুর সদর উপজেলায় আমদহ-আশরাফপুর রাস্তা সম্প্রসারণ কাজের ঠিকাদারের নুর ইসলামের বিরুদ্ধে জোর করে স্থানীয় কৃষদের ফসলি জমির মাটি কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে অন্তত শতাধিক কৃষক জমি ও জমির ফসল হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ভুক্তভোগী কৃষকেরা বলছেন, সড়কের পাশের জমি থেকে গভীর গর্ত করে ফসল সহ মাটি কেটে নিয়েছেন ঠিকাদার। সেখানে আর চাষাবাদ করা যাচ্ছে না। তাঁদের কোনো ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়নি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, গত বছর অক্টোবরে সদর উপজেলার আমদহ-আশরাফপুর সড়কের চার কিলোমিটার অংশ প্রশস্ত করার কাজ পায় কুষ্টিয়ার নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৯৬ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। চলতি বছরের মে মাসে কাজের মেয়াদ শেষ হবে। আমদাহ গ্রামের চাষি টুটুল বলেন ৩ কাঠা জমির আলুসহ মাটি কেটে নিয়েছে। আমরা বাধা দিলে হুমকি দিয়ে বলে এটা সরকারি কাজ বাধা দিলে অসুবিধা আছে। আমদহ গ্রামের অপর চাষি ইউনুচ শেখ বলেন, সড়কের পাশে ১০ কাঠা জমি রয়েছে ওই জমি চাষাবাদ করে তাঁর সংসার চলে ‘বোরো ধানের জন্য বীজতলা দিয়েছিলাম। একদিন সকালে জমিতে গিয়ে দেখি, যন্ত্র দিয়ে জমি থেকে মাটি তুলে নিচ্ছেন ঠিকাদারের লোকজন। বাধা দিতে গেলে তারা পুলিশের ভয় দেখান। আমদহ গ্রামের কৃষক হাসানুজ্জামান বলেন, ওই সড়কের পাশে তার দুই বিঘা জমি রয়েছে। সেখানে কলার চাষ করেছিলেন। ঠিকাদার কোনো কিছু না জানিয়ে কলাগাছসহ মাটি কেটে সড়কে দিয়েছেন। সেখানে গভীর গর্ত করা হয়েছে। এখন আর চাষাবাদ করা যাচ্ছে না। মাটি কিনে ভরাট করতে গেলে লক্ষাধিক টাকা লাগবে। সড়কের পাশে আজগর শেখের ১০ কাঠা জমি রয়েছে। গতকাল গিয়ে দেখা যায়, একটি ট্রাক্টর দিয়ে সেখানে জমির মাটি সমান করা হচ্ছে। আজগর শেখ বলেন, ঠিকাদারের লোকজন গায়ের জোরে কৃষিজমি নষ্ট করে মাটি তুলে নিয়েছে। এখন টাকা খরচ করে জমি সমান করতে হচ্ছে। গর্ত ভরাট ও জমি সমান করার জন্য প্রতি বিঘায় ৪০ হাজার টাকা লাগছে। এ সম্পর্কে ঠিকাদার বলেন, জমি থেকে সামান্য মাটি কেটে সড়ক সম্প্রসারণ করা হয়েছে। যখন কাজ চলছিল, তখন কেউ বাধা দেননি। এখন অনেকে কথা বলছেন। এলজিইডির মেহেরপুর কার্যালয়ের নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, দরপত্র অনুযায়ী, সড়ক সম্প্রসারণ করার কাজে ব্যবহৃত মাটি অবশ্যই ঠিকাদারকে ব্যবস্থা করে নিতে হবে। এ কারণে ১৫ লাখ টাকা শুধু মাটির ব্যবস্থা করার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কৃষিজমি নষ্ট করে সড়ক সম্প্রসারণ একেবারেই অবৈধ। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 

সর্বশেষ খবর