মঙ্গলবার, ১৫ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

জনবল সংকটে বেহাল লাইভ স্টক সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি

গৌতমাশিস গুহ সরকার, গাইবান্ধা

জনবল সংকটে বেহাল লাইভ স্টক সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি

প্রাণিসম্পদ স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে ও মাঠপর্যায়ে প্রাণিসম্পদ সেবাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে পাশাপাশি দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির জন্য সরকার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘ইনস্টিটিউট অব লাইভ স্টক সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’ (আইএলএসটি) নামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে। দেশে এ রকম মোট পাঁচটি প্রতিষ্ঠান আছে। তার মধ্যে রংপুর বিভাগের একমাত্র এই প্রতিষ্ঠানটি গাইবান্ধায় ২০১৬ সাল থেকে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করে। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ছয় বছর পরও শিক্ষকসহ ব্যাপক পদ ফাঁকা পড়ে থাকায় এখানে বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম। আইএলএসটি সূত্রে জানা  গেছে, শহরের বোর্ডবাজার এলাকায় ১২ একর জমির ওপর তৈরি করা আধুনিক অবকাঠামো এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, ল্যাব, আসবাবপত্র সবই রয়েছে। কিন্তু নেই শুধু প্রয়োজনীয় শিক্ষক ও জনবল। এখানে মোট পদ আছে ৮০টি, যার বিপরীতে ৫১টি পদই শূন্য পড়ে আছে। অধ্যক্ষ পদ ফাঁকা প্রায় সাত মাস ধরে। এ ছাড়া ৩৬ শিক্ষকের (ইন্সট্রাক্টর) পদের বিপরীতে কাজ করছেন মাত্র ৯ জন শিক্ষক। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় এখানে চার বছর মেয়াদি ‘ডিপ্লোমা ইন লাইভ স্টক’ কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। বোর্ড প্রতি বছর অনলাইনে আবেদন নিয়ে গাইবান্ধার আইএলএসটিতে এসএসসি পাস শিক্ষার্থীদের ৫০টি আসনে ভর্তি করে থাকে। যার ৩৫% আসন ছাত্রীদের জন্য সংরক্ষিত থাকে। সারা দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা আগ্রহ নিয়ে এখানে ভর্তি হয়। কিন্তু শিক্ষক স্বল্পতায় এখানে পাসের হার কম হচ্ছে বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। এখন পর্যন্ত প্রথম ব্যাচের কোর্স শেষ হয়েছে। যেখানে পাসের হার ৫০%। এ ছাড়া আরও চারটি ব্যাচের শিক্ষা কার্যক্রম চলমান আছে। এখানে প্রাণিসম্পদ বিভাগে সিনিয়র ইন্সট্রাক্টর (লাইভ স্টক) ৮টি পদের বিপরীতে ৬ জন কর্মরত থাকলেও ইন্সট্রাক্টরের ১২টি পদের বিপরীতে ১১টি পদই শূন্য। জুনিয়র ইন্সট্রাক্টরের ৬টি পদের সবই ফাঁকা। ডেমনস্ট্রেটরের পদ ৫টি হলেও এ পদে কেউ কর্মরত নেই। বিজ্ঞান বিভাগে  ইন্সট্রাক্টর ২, ফিজিক্যাল ইন্সট্রাক্টর ১ এবং ডেমনস্ট্রেটরের ১টি করে পদ থাকলেও সব পদই শূন্য পড়ে আছে। মানবিক বিভাগেও ২টি ইন্সট্রাক্টর ও ডেমনস্ট্রেটরের পদ ফাঁকা। একইভাবে অ্যানিমল প্রোডাকশন অফিসার, ভেটেরিনারি সার্জন, কম্পাউন্ডার ও ফিল্ড অ্যাসিসটেন্ট পদও শূন্য পড়ে আছে। এ ছাড়া প্রশাসন বিভাগে ২০ পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ৮ জন। প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ পদের দায়িত্বে থাকা চিফ ইন্সট্রাক্টর ডা. মো. আবদুল হাই বলেন, বিসিএস ক্যাডারের শিক্ষক দ্বারা আইএলএসটির শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। শিক্ষকসহ সব শূন্য পদে লোক চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পত্র দেওয়া হলেও এখনো কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি। তাই জোড়াতালি দিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর