দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট। নাব্যতা সংকটের কারণে ফেরি চলাচল ব্যাহত, যানবাহনের চাপ ও অব্যবস্থাপনার কারণে ফেরিঘাটের উভয় পাড়ে যাত্রী ও যানবাহন চালককে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া প্রান্তের ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ৬ কিলোমিটার পর্যন্ত যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া প্রান্তে ফেরি পারের অপেক্ষায় রয়েছে শত শত যানবাহন। প্রচণ্ড গরমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরির অপেক্ষায় বসে থেকে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন রাজধানীমুখী যাত্রী ও যানবাহন চালকরা। একই অবস্থা রয়েছে পাটুরিয়া ফেরিঘাটে। গতকাল দুপুরে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় দেখা যায়, দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে গোয়ালন্দের পদ্মার মোড় পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ গাড়ির সিরিয়াল রয়েছে। এ যানবাহনগুলোর মধ্যে শতাধিক যাত্রীবাহী বাস রয়েছে। রাজবাড়ী ট্রাফিক পুলিশ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাত্রীবাহী বাস ও পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার করছেন। অন্যদিকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে শতাধিক যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক ফেরিপারের অপেক্ষায় রয়েছে। যাত্রীবাহী ট্রাকচালকরা অভিযোগ করে বলেন, শুষ্ক মৌসুমে নদীতে নাব্যতা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ঘাটের পাশে ভয়াবহ নাব্যতা রয়েছে। ফেরি ভিড়তে সমস্যা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিনেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ৮/১০ ঘণ্টা অপেক্ষা করে ট্রাকচালকরা ফেরিতে পদ্মা পাড়ি দিতে পারছেন। যাত্রীবাহী বাসগুলোকে পদ্মা পাড়ি দিতে সময় লাগছে ৪/৫ ঘণ্টা। প্রচণ্ড গরমে রাস্তায় যানবাহনের মধ্যে বসে থাকতে হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসবি পরিবহনের এক যাত্রী বলেন, ফেরিঘাটের অব্যবস্থাপনার দায় শুধু বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের। তারা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে রাখে। দীর্ঘদিনে ঘাট এলাকায় পুলিশের সিরিয়াল ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। অন্য কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা রয়েছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশন বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. শিহাব উদ্দীন বলেন, এ রুটে বর্তমানে ১৯টি ফেরি চলাচল করছে। নাব্যতা সংকটে ফেরি চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান করা হবে। রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান বলেন, আমার পুলিশ সদস্যরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক সচল রাখতে। তবে কিছু ক্ষেত্রে উন্নতি করা প্রয়োজন। আমি ব্যক্তিগতভাবে অন্য সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছি। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে সেগুলো সমাধান করবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন।