বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

যমুনার গতিপথ বদলালেও কাটেনি ভাঙন আতঙ্ক

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

যমুনার গতিপথ বদলালেও কাটেনি ভাঙন আতঙ্ক

সারিয়াকান্দি উপজেলার সীমানায় গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে যমুনা নদীর। গতিপথ বদল হয়ে এক পাড়ে কৃষিজমি বাড়লেও অন্য পাড়ে ভাঙন আতঙ্ক কাটেনি। কয়েক হাজার কোটি টাকায় নদীশাসন কাজ করায় নদীটি ডান তীর থেকে সরে যাচ্ছে। এতে সারিয়াকান্দি শহররক্ষা বাঁধ সুরক্ষিত থাকলেও জামালপুর জেলা অঞ্চলের দিকে নদীর ক্ষিপ্রতা বাড়ছে।

জানা যায়, জামালপুর ও বগুড়া জেলাকে দুই ভাগ করেছে যমুনা নদী। স্বাধীনতার আগে এ নদীর বাঁ তীর অর্থাৎ জামালপুরের দিকে বেশি ভাঙত। বিভিন্ন সময় বন্যার কারণে যমুনার গতিপথ পরিবর্তন হয়ে ডান তীর বগুড়ার সারিয়াকান্দি শহরে ভাঙন দেখা দেয়। ফলে উপজেলার বেশির ভাগ এলাকা চলে যায় নদীগর্ভে। দীর্ঘ কয়েক দশক ভাঙনের পর শুরু হয় নদীশাসন কাজ। এ কাজ সম্পন্ন হওয়ায় যমুনার ডান তীরে চালুয়াবাড়ী, হাটশেরপুর, কাজলা ও সারিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নে বিশাল চরাভূমির সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ওইসব এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনার প্রখর স্রোত দেখা যাচ্ছে না। এখন মূল স্রোতধারা বয়ে যাচ্ছে বাঁ তীরের দিকে। সারিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আরমান আলী জানান, ১৯৫৯ সালে নদী ভাঙনের শিকার হয়ে তিনি কাজলার কুড়িপাড়া থেকে সদর ইউনিয়নে স্থায়ী বসতি গড়েছেন। যমুনার ভাঙনের ফলে অনেকেই তাদের বসতভিটা হারিয়েছেন। কয়েক বছর আগেও যমুনা যেখানে প্রমত্ত ছিল এখন সেখানে ধু-ধু চর জেগেছে। ভেঙে যাওয়া স্থানে এখন বালুচর থাকায় চাষবাস শুরু হয়েছে। সারিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা নূরুল হোসেন বলেন, ‘একসময় বন্যা ও ভাঙনে যমুনায় চলে যায় ঘরবাড়ি। প্রায় ২০ বছর ধরে অন্যত্র ঘরবাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছি। এর মধ্যে আগের ভেঙে যাওয়া এলাকা জেগে উঠেছে। এখন সেখানে চাষ শুরু করা হয়েছে। কেউ কেউ আবার নতুন করে বসতি গড়ার চেষ্টা করছেন।’ বগুড়া-১ আসনের সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নান বলেন, ‘প্রয়াত এমপি আবদুল মান্নানের প্রচেষ্টায় বিভিন্ন সময় সারিয়াকান্দির যমুনার বিভিন্ন হার্ডপয়েন্ট, স্পার ও তীর সংরক্ষণের কাজ করা হয়েছে। ফলে বগুড়া সীমানায় থাকা যমুনা বর্তমানে জামালপুর অর্থাৎ বাঁ তীরে অবস্থান করছে। যদিও যমুনা সব সময় গতিপথ পরিবর্তন করে।’ বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘যমুনা বৈচিত্র্যময়। নদীটি শাসন করার ফলে বগুড়া সীমানায় আপাতত কম ভাঙছে। কিন্তু যে কোনো সময় আবার গতিপথ পরিবর্তন হতে পারে। ভাঙা ও গড়া হলো নদীর কাজ।’

সর্বশেষ খবর