মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

হিজলায় তেল-গ্যাসের সম্ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

হিজলায় তেল-গ্যাসের সম্ভাবনা

বরিশালের মেঘনা তীরবর্তী হিজলায় সিসমিক জরিপের মাধ্যমে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান করবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্রেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)। এ লক্ষ্যে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলেই শুরু হবে সার্ভে কার্যক্রম। সার্ভে সফল হলে মজুদ নির্ধারণসহ বাণিজ্যিক পরিকল্পনা গ্রহণ করবে সরকার। এর আগে ১৯৭৬ সালেও রাশিয়ার একটি কোম্পানি দুটি কূপ খনন করে সার্ভে করে সেখানে। এর ৪৬ বছর পর ফের সেখানে জরিপ শুরু করতে যাচ্ছে সরকার। এ লক্ষ্যে অনুসন্ধান ক্ষেত্রের সব শেষ অবস্থা দেখতে গত রবিবার দিনভর বরিশালের হিজলা উপজেলার গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নের মেঘনা নদীর তীরবর্তী কোড়ালিয়া এলাকা পরিদর্শন করেন জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবসহ একটি বিশেষজ্ঞ দল। প্রবীণ বাসিন্দারা জানান, ১৯৭৬ সালে রাশিয়ার একটি কোম্পানি কোড়ালিয়া এলাকায় দুটি কূপ খনন করে ২ থেকে ৩ মাসব্যাপী জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করে। পরে তারা কূপ ভরাট করে চলে যায়। এরপর এ নিয়ে ওই এলাকায় সরকারি-বেসরকারি কোনো কোম্পানির তৎপরতা দেখা যায়নি। তবে ওই এলাকায় গভীর নলকূপ স্থাপন করা হলে কিছু নলকূপ থেকে তেল ও গ্যাস ওঠার উদাহরণ রয়েছে। তারা জানান, বিগত সরকারগুলো এমন সম্ভাবনাকে অবহেলা করেছে। এখানে তেল ও গ্যাস মজুদ পাওয়া গেলে দেশে জ্বালানি সংকট কমবে এবং স্থানীয় মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে। সরকারকে এই ক্ষেত্রে আকৃষ্ট করায় স্থানীয় সংসদ সদস্য পংকজ  দেবনাথকে ধন্যবাদ জানান তারা। গত রবিবার কোড়ালিয়া এলাকা পরিদর্শন করেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবসহ জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। তারা পুরনো ম্যাপ ধরে ৭৬ সালে রাশিয়ার খনন করা কূপ দুটিও ঘুরে দেখেন। এ সময় জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, হিজলায় জ্বালানি অনুসন্ধানের জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলেই সেখানে সিসমিক জরিপ শুরু হবে। তিনি আরও বলেন, ওই এলাকার ভূ-তাত্ত্বিক অবস্থা দেখে গ্যাস থাকার সম্ভাবনা আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গ্যাস থাকলে কোথায় আছে সেটি আগে খুঁজে বের করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে এর পরিমাণও নির্ধারণ করা দরকার। সার্ভে সফল হলেই এ বিষয়ে বাণিজ্যিক চিন্তা-ভাবনা করবে সরকার। পরিদর্শন দলের অন্যতম সদস্য বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্রেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার মেহেরুল হাসান বলেন, এখানে গ্যাসের সম্ভাবনা আছে। এ কারণেই সরকার এখানে বিনিয়োগের চিন্তাভাবনা করছে। আরেক পরিদর্শনকারী বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলে আগামী অক্টোবর থেকে জরিপ কাজ শুরু হবে। জরিপ শুরু হলে কমপক্ষে ১ হাজার ৩০০ লোক একসঙ্গে কাজ করতে পারবে। ‘রিগ’ দিয়ে তিন মাসব্যাপী চলবে জরিপ ও খনন কার্যক্রম।

 জরিপ সফল হলে পাল্টে যাবে এই এলাকার চিত্র। ভাগ্যের উন্নয়ন হবে স্থানীয় মানুষের। পরিদর্শন দলের সঙ্গে পুরো এলাকা ঘুরে দেখার পর স্থানীয় এমপি পংকজ দেবনাথ বলেন, সবকিছু ঠিক থাকলে সরকার আন্তরিকভাবে এই প্রকল্পে কাজ করবে। এতে দেশের জ্বালানির ঘাটতি অনেক কমে যাবে।

সর্বশেষ খবর