শনিবার, ২ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

মহাবিপন্ন শাপলাপাতা মাছে বাজার সয়লাব

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট

মহাবিপন্ন শাপলাপাতা মাছে বাজার সয়লাব

‘শাপলাপাতা মাছ কেজি ৪০০, কেজি ৪০০। তাজা শাপলাপাতা মাছ ৪০০ টাকা। একবার খাইলে আবার আসবেন, ৪০০ কেজি শাপলাপাতা মাছ।’ এভাবে বাগেরহাটের মোংলা পৌরসভার প্রধান মাছবাজারে ডাকাডাকি করে প্রকাশ্যে বেচাকেনা হচ্ছে মহাবিপন্ন প্রজাতির শাপলাপাতা মাছ। যদিও বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবনের বিভিন্ন নদ-নদীতে এ মাছ আহরণ, মজুদ ও বিক্রি নিষিদ্ধ। শাপলাপাতা মাছের বৈজ্ঞানিক নাম ‘স্টিংরে ফিশ’। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন)-এর তালিকায় শাপলাপাতা মাছকে মহাবিপন্ন প্রজাতি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ অনুযায়ী দেশে শাপলাপাতা মাছ শিকার, আহরণ, মজুদ ও বিক্রি নিষিদ্ধ। প্রচারের অভাবে অধিকাংশ ক্রেতা শাপলাপাতা মাছ নিষিদ্ধের বিষয়টি জানেন না। ফলে বিক্রেতাদের হাঁকডাক শুনে ক্রেতারাও হুমড়ি খেয়ে কিনছেন। মোংলা পোর্ট পৌরসভা মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি আফজাল ফরাজি ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল হালিম বলেন, ‘প্রায় প্রতিদিন বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবনের নদ-নদীতে জালে ধরা পড়া শাপলাপাতা মাছ বাজারে আনছেন জেলেরা। এ মাছ ধরা, মজুদ বা বিক্রি যে নিষিদ্ধ তা আমরা জানি না, আমাদের কেউ বলেনি।’ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রধান অধ্যাপক আবদুর রউফ বলেন, ‘বঙ্গোপসাগর বা সুন্দরবনের নদ-নদীতে দিনের পর দিন এভাবে নিধন চলতে থাকলে একসময় শাপলাপাতা মাছ পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যাবে। অবৈধ শিকার বন্ধ না হলে সাগরসহ সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শাপলাপাতা মাছ নিধন ঠেকাতে সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসতে হবে।’ খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, ‘প্রচার কম হওয়ায় অনেকেই জানে না শাপলাপাতা মাছ শিকার নিষিদ্ধ। সুন্দরবন বিভাগ থেকে প্রচার চালানো হচ্ছে। কেবি ফিশারিঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারটি শাপলাপাতা মাছসহ জাফর সরদার নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’ তাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

সর্বশেষ খবর