শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

গলার কাঁটা ৩ কিলোমিটার

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

গলার কাঁটা ৩ কিলোমিটার

নওগাঁর রানীনগরের বড়গাছা ইউনিয়ন ধানসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য উৎপাদনের জন্য প্রসিদ্ধ। এই ইউনিয়নের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ রাস্তা হচ্ছে গহেলাপুর থেকে কাটরাশইন হাটখোলা রাস্তা। বর্তমানে এ রাস্তার বেহাল দশার কারণে থমকে আছে এই অঞ্চলের কৃষকসহ হাজার হাজার মানুষের ভাগ্যের চাকা। মাত্র ৩ কিলোমিটার সড়কটি এখন এই অঞ্চলের মানুষের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। তবুও দৃষ্টি নেই কর্তৃপক্ষের। জানা গেছে, উপজেলার কাটরাশইন, উমরপুর, পোঁওয়াতাপাড়াসহ ৮-১০টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তা হচ্ছে গহেলাপুর-কাটরাশইন রাস্তা। নব্বই দশকে গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙা করতে গহেলাপুর বাজার থেকে কাটরাশইন হাটখোলায় যাওয়ার জন্য এই ৩ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করা হয়। সেই সময় রাস্তাটির গহেলাপুর থেকে ১ কিমি পর্যন্ত পাকা করা হয় আর অবশিষ্ট রাস্তায় ইট বিছানো হয়। কিন্তু পরবর্তীতে বছরের পর বছর রাস্তাটি সংস্কার কিংবা মেরামত না করায় বর্তমানে শুকনো মৌসুমেও চলাচল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে রাস্তার কিছু অংশ থেকে ইট উধাও হয়ে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্তের। যে গর্ত পায়ে হেঁটে পার হওয়াই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যার কারণে এই অঞ্চলের কৃষকসহ হাজার হাজার মানুষ তাদের কৃষিপণ্যসহ অন্যান্য উপকরণ পরিবহন করতে পারছে না। এমনকি ভ্যানগাড়িও চলাচল করতে পারছে না। যার কারণে কৃষকরা বাধ্য হয়েই ধানসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণ কমমূল্যে ফড়িয়াদের কাছে বিক্রি করছে। এতে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে বছরের পর বছর। এ ছাড়াও রাস্তাটির পাঁচবাড়িয়া নামক স্থানের একটি কালভার্ট ভেঙে পড়ায় রাস্তার দুর্ভোগের মাত্রাকে আরও একধাপ বাড়িয়ে দিয়েছে। রাস্তাটি ভালো না হওয়ায় শুকনো ও বর্ষা মৌসুমে এই অঞ্চলের শত শত শিক্ষার্থীর দীর্ঘপথ পায়ে হেঁটে পাড়ি দিয়ে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে হয়।

যার কারণে এই অঞ্চলের মানুষের অর্থনীতির চাকা থমকে আছে মাত্র এই ৩ কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তার কারণে। কাটরাশইন গ্রামের মিলন হোসেন বলেন, দেশের প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে শহরের সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার কথা থাকলেও আমরা এই সুবিধা থেকে অনেক দূরে আছি। আমরা এই অঞ্চলের মানুষরা এখনো চরমভাবে অবহেলিত। গ্রামীণ যোগাযোগব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন না করা পর্যন্ত শহরের সুবিধা কখনই গ্রামে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব নয়। বড়গাছা ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মতিন বলেন, রাস্তাটি বর্তমানে চলাচলে চরম দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর এই রাস্তাটি মেরামত করার বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করব। উপজেলা প্রকৌশলী শাহ মো. শহীদুল হক বলেন, এই রাস্তাটি উপজেলা পরিষদ তৈরি করেছিল।

তাই উপজেলা প্রশাসন চাইলেই বরাদ্দ দিয়ে এই জনগুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ রাস্তাটি মেরামত কিংবা সংস্কার করতে পারে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, আমি রাস্তাটি সরেজমিন পরিদর্শন করে দ্রুত তা সংস্কার কিংবা মেরামত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করব।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর