শিরোনাম
রবিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় কপাল পুড়েছে কৃষকের

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় কপাল পুড়েছে কৃষকের

‘এনজিও থেকে লোন কইরা মাইনসের কাছে থেকে এক বিঘা জমি লিজ নিছি। সার ও বিষ বাকিতে নিয়ে খেতে দিছি। ধান হলে ব্যাচা টেকা (টাকা) শোধ করব। আর সেই ধান ভাটার ধোঁয়ায় নষ্ট হয়া গেল। আমরা এখন খামু কি, এনজিওর কিস্তি শোধ করমু কী দিয়া?’ নিজের বোরো খেতের সামনে বসে আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাটিয়া গ্রামের লুৎফর রহমান। শুধু লুৎফর নন, মাটিয়া গ্রামের ২০ জন কৃষকের প্রায় ১২ বিঘা জমির বোরো ইট ভাটার ধোঁয়ায় নষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ইটভাটা মালিক মোফাজ্জাল হোসেন সরকারের বিরুদ্ধে তাড়াশের ইউএনও এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। নওগাঁ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মেসার্স এম এম ব্রিকসের মালিক মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘আমার ভাটায় বিষাক্ত ধোঁয়া নির্গমণ ব্যবস্থা আছে। তারপরও যেহেতু কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, চেষ্টা করব ক্ষতিপূরণ দেওয়ার। ইতোমধ্যে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে। তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন্নাহার লুনা বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রাথমিকভাবে ধান খেতে বিভিন্ন ওষুধ দিতে বলা হয়েছে। এতে যদি ধান রক্ষা না হয় তাহলে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার আমার নেই। সে বিষয়ে ইউএনও মহোদয় দেখবেন। ইউএনও মেজবাউল করিম জানান, কৃষকদের অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত ওই ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরেজমিনে দেখা যায়, খেতের ধানগাছ ধোঁয়ার কারণে লালচে হয়ে গেছে। কুঁকড়ে গেছে পাতা। ধানের শিষ পরিণত হয়েছে চিটায়। শুধু ধান নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আম ও নারিকেল গাছ। স্থানীয় কৃষকরা জানান, ধোঁয়া বন্ধ হলেও বিষাক্ত রাসায়নিকের বিষক্রিয়ায় এখনো ফসলসহ গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কৃষক আবু সাইদ, জয়নাল, রবিউল ইসলাম, লুৎফর রহমান বলেন, মাত্র ২০-২২ দিন বাদেই ধান কাটা শুরু করব। আমরা চাই ভাটার মালিক আমাদের ক্ষতিপূরণ দিক। আমরা এলাকায় ভাটা দেখতে চাই না। দ্রুত ভাটা বন্ধ করা হোক।

সর্বশেষ খবর