ঠাকুরগাঁও হরিপুর উপজেলায় উপসহকারী সেটেলমেন্ট অফিসারকে লাঞ্ছনার ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সেটেলমেন্ট অফিস। গতকাল মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হরিপুর থানার ওসি তাজুল ইসলাম। এ ঘটনায় গতকাল চারজনের নাম উল্লেখসহ সাত-আটজনকে অজ্ঞাত করে হরিপুর থানায় মামলা করেছে সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা। মামলায় এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন- ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম (৪৫), জয়নুল ইসলাম (৪০), মো. ফজলু (৪০), আবু তাহের (৩৫)সহ অজ্ঞাত আরও সাত-আটজন। জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার মো. ফেরদৌস খাঁন তার কার্যালয়ে উপজেলার ভবানন্দপুর মৌজায় ৩০ ধারায় দায়ের করা আপত্তি শুনানির কাজে কর্মরত ছিলেন। এমন সময় হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম দলবল নিয়ে ওই কর্মকর্তার কার্যালয়ে বেআইনিভাবে প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে দেয় এবং ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।
সেই সঙ্গে দায়ের করা আপত্তির শুনানি, তাদের পক্ষে রায় দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। তাদের কথায় কর্ণপাত না করায় ওই কর্মকর্তাকে হত্যা করে লাশ গ্রামে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকে। এক পর্যায়ে এজাহারভুক্ত আসামিরা এজলাস ভেঙে জরিপসংক্রান্ত কেসের নথিপত্র ছিঁড়ে ফেলেন। হত্যার উদ্দেশ্যে ওই কর্মকর্তার শার্টের কলার ধরে এজলাস থেকে নামিয়ে মারধর করতে থাকে। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে উদ্ধার করে হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, উনিও উত্তেজিত হয়ে কথা বলেছেন, আমিও উত্তেজিত হয়ে কথা বলেছি। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ভুক্তভোগী সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার মো. ফেরদৌস খাঁন জানান, ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ৫০ হাজার টাকা চাঁদা ও তাদের পক্ষে রায় দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। আমি কথা না শোনায় আমাকে মারধর করে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোস্তাফিজার রহমান বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে মীমাংসার কথা বলে আমাদের ডেকে উনার উপস্থিতিতে আবারও বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদর্শন করেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান। যা খুবই দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন তিনি। হরিপুর থানার ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে থানায় মামলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আসামিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
