বুধবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে অনিয়মের অভিযোগ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে অনিয়মের অভিযোগ

পঞ্চগড়ে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে কার্ড নবায়নে টাকা লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। হতদরিদ্রদের মধ্যে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণের জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয় বিনা পয়সায় এসব কার্ড সরবরাহ করলেও অফিস খরচের নামে প্রতি কার্ড বাবদ ১০০ থেকে ২০০ টাকা নেওয়া হয়েছে। এ কর্মসূচির আওতায় কার্ডধারীদের কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট ডিলাররা এসব টাকা উত্তোলন করেছেন। আর মোটা অংকের এ টাকা পকেটে ঢোকানোর ব্যাপারে সদর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা ও ডিলাররা পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’ এমন প্রতিপাদ্য নিয়ে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে হতদরিদ্রদের মধ্যে কম দামে চাল সরবরাহের উদ্যোগ নেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়। এ কর্মসূচির আওতায় ৩০ টাকা কেজি দরে চাল কিনতে পারছেন দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের দেশের ৫০ লাখ পরিবার। সরেজমিনে দেখা যায় এ কর্মসূচির আওতায় হতদরিদ্রদের মধ্যে কম দামে চাল সরবরাহের জন্য সদর উপজেলায় ১৪ হাজার মানুষকে কার্ড প্রদান করা হয়। এ কার্ড নবায়নের জন্য প্রত্যেক কার্ডধারীর কাছে ১০০ থেকে ২০০ টাকা নেওয়া হয়েছে। প্রতি কার্ড বাবদ ১০০ টাকার অংকটা কম শোনালেও ভয়ভীতি দেখিয়ে ১৪ হাজার হতদরিদ্রের কাছ থেকে প্রায় ১৫ থেকে ২০ লাখ আদায় করা হয়েছে। এসব হতদরিদ্র মানুষ সারা দিনের আয় থেকেই এ টাকা প্রদান করেছেন। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় খাদ্য অধিদফতরের নির্ধারিত ডিলাররা এ টাকা আদায় করেছেন। উপকারভোগীরা বলছেন, অফিস খরচের নাম করে এ টাকা আদায় করেছেন ডিলাররা। প্রত্যেক ডিলারের আওতায় প্রায় সাড়ে ৫০০ উপকারভোগী রয়েছেন। কার্ডপ্রতি ১০০ টাকা হিসেবে কম করে ৫৫ হাজার অতিরিক্ত টাকা অবৈধভাবে আদায় করেছেন সংশ্লিষ্ট ডিলাররা। হাঁড়িভাসা ইউনিয়নের পাহাড়বাড়ি এলাকার রাসেল কবির জানান, আমার কাছ থেকে কার্ড নবায়নের জন্য ১০০ টাকা নিয়েছে ডিলার। টাকা না দিলে নাম বাদ দেয়। তাই দিয়েছি। এ ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট ডিলার আবু হোসেন জানান, কেউ ৫০ আবার কেউ ৩০ টাকা দিয়েছে। ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা উত্তোলন করে আমার বড় ভাইকে দিয়েছি। বড়ভাই অফিসে দিয়েছে। এদিকে কার্ড নবায়নের এ টাকা পকেটে ঢোকানোর ব্যাপারে পরস্পরবিরোধী অভিযোগ করেছেন উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা ও ডিলাররা। নাম গোপন রাখার শর্তে এসব ডিলার বলছেন, এ টাকা অফিসের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জহিরুল হককে দেওয়া হয়েছে।

অমরখানা ইউনিয়ন পরিষদের বোর্ড অফিস বাজারের ডিলার নজরুল ইসলাম জানান, প্রত্যেক বরাদ্দের জন্য টিসিএফ (উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা)কে ১ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। আমি কার্ডের জন্য টাকা নেইনি। গত জানুয়ারি মাস থেকে এ কার্ড নবায়নের কার্যক্রম শুরু হয়। অবশ্য এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা জহিরুল হক। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না, ডিলাররা নিলে নিতে পারে। এমন অভিযোগ এখনো পাননি বলে দাবি করেছেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা রেজাউল হক খন্দকার। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর