শনিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

হাওরে হাওরে বোরো ধানে চিটা

সৈয়দ বয়তুল আলী, মৌলভীবাজার

হাওরে হাওরে বোরো ধানে চিটা

মৌলভীবাজারে হাওর অঞ্চলের মানুষের একমাত্র সম্পদ হাওরে উৎপাদিত বোরো ধান। এখানকার মানুষ নির্ভরশীল হাওরের বোরো ধানের ওপর। তাদের পুরো বছরের খোরাকি এবং সব ব্যয় চলে ধান বিক্রি করে। কৃষকরা ধার-দেনাও মেটান ধান বিক্রির টাকায়। তবে এ বছর বোরো মৌসুমে দীর্ঘমেয়াদি খরা ও পানি সেচের সুবিধা না থাকায় রোপণকৃত ব্রি-২৮ জাতের ধানে চিটা ধরায় লোকসানে পড়েছেন হাওরপাড়ের কয়েক হাজার প্রান্তিক ও বর্গাচাষি। কোথায়ও কোথাও পুরো জমিতে চিটা ধরায় কাটার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। হাওরপাড়ের কৃষকদের কাছ থেকে জানা যায়, নিচু এলাকার সব জমিতে আবাদ হয় বিহার-২৮ জাতীয় ধান। এ খরার প্রভাব শুধু ব্রি-২৮ জাতীয় ধানেই পড়েনি, প্রভাব পড়েছে হাওরের উপরের অংশের ব্রি-২৯-সহ বিভিন্ন ধানে। এদিকে জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হবে। কিন্তু মাঠে কৃষকের কান্নায় দিন কাটছে। গত বছর হাওরের যে এলাকায় ব্রি-২৮ জাতীয় ধান প্রতি বিঘায় ১৫ থেকে ২০ মণ পেয়েছেন কৃষকরা। এ বছর দীর্ঘমেয়াদি খরায় ধানে চিটা ধরার কারণে ওই এলাকায় ব্রি-২৮ ধান প্রতি বিঘায় কৃষকরা পাচ্ছেন ৪ থেকে ৫ মণ। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এ বছর বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৬ হাজার ৮০০ হেক্টর। চাষাবাদ হয়েছে ৫৭ হাজার ৫৭০ হেক্টর। এর মধ্যে ব্রি-২৮ জাতীয় আগাম ধান চাষবাদ হয়েছে ১৩ হাজার ৯২৫ হেক্টর জমিতে। হাওর কাউয়াদীঘির পূর্বপাড়ের পশ্চিম ভাগ গ্রামের জয়নাল মিয়া বলেন, ধানে চিটা ধরার কারণে আমরা অনেক লোকসানে পড়েছি। গত বছর দুই বিঘা জমিতে ৪০ মণ ধান পেয়েছিলাম। এবার  ১০ মণ ধান পেতে পারি। একই এলাকার খায়রুল, শহিদ মিয়া, সাদিকসহ অনেকে বলেন, এ বছর খরার কারণে পানির অভাবে আমাদের জমিতে ধানে চিটা ধরে অনেক জমির ধান কাটার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আবার যেসব জমিতে ধান হয়েছে তার উৎপাদন অনেক কম। এ হাওরের ছালিক মিয়া বলেন, সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় এবং নদী, খালে পানি না থাকায় জমিতে পানি দিতে পারি না, তাই আমার ১৮ বিগা ব্রি-২৯ জাতের ধানি জমি নষ্ট হয়েছে।

হাকালুকি হাওর পারের ভুকশিমইল ইউনিয়নের কৃষক মো. ইদই মিয়া, কাদির মিয়া, গিয়াস উদ্দীনসহ অনেকেই বলেন, খরার কারণে এ বছর হাওরে ব্রি-২৮ জাতীয় ধান চিটা ধরেছে।

সর্বশেষ খবর