শনিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

দাউদকান্দি ফেরিঘাটে ভেড়ে না নৌযান, বেকার শত শত শ্রমিক

দাউদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

দাউদকান্দি ফেরিঘাটে ভেড়ে না নৌযান, বেকার শত শত শ্রমিক

কুমিল্লার অন্যতম প্রসিদ্ধ নদী গোমতী। চট্টগ্রাম বিভাগের পশ্চিমে এবং ঢাকা বিভাগের পূর্ব পাশ দিয়ে বয়ে গেছে এ নদী। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি-মেঘনা-গোমতী সেতু এলাকায় মেঘনার সঙ্গে এই নদী মিলিত হওয়ায় স্থানটি মেঘনা-গোমতীর মোহনা বলা হয়। এক সময় মেঘনা-গোমতীর দাউদকান্দি নতুন ফেরিঘাটে ভিড়ত পণ্যবোঝাই জাহাজসহ বিভিন্ন নৌযান। তখন শ্রমিক আর সাধারণ মানুষের কোলাহল থাকত ঘাট এলাকায়। এখন আর নেই সেই কোলাহল। মেঘনা-গোমতীতে জেগে উঠেছে বড় বড় চর। ধু-ধু বালুচরের কারণে দাউদকান্দি ঘাটে এখন আর ভিড়ছে না জাহাজ, কার্গো। ফলে বেকার হয়ে পড়েছে শত শত শ্রমিক। মানবেতর জীবনযাপন করছে অনেকের পরিবার। সরেজমিনে দেখা যায়, গোমতী নদ এখন পানিশূন্য। মাইলের পর মাইল চর আর চর। দুই পাশের প্রাকৃতিক পরিবেশ রুক্ষ হয়ে উঠছে। অভিযোগ রয়েছে, নিয়মিত ড্রেজিং না করায় নদীর এ অবস্থা হয়েছে। সচেতন মহল মনে করছে, গোমতী সেতু নির্মাণের ফলে রাজধানীসহ উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের বৈপ্লবিক পরিবর্তন হলেও মূল নদীর অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। গোমতী হারিয়েছে তার যৌবন। সেই সঙ্গে হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে এর শাখা নদীর। এ কারণে কুমিল্লা জেলার বৃহদাংশে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে। নদীতে পানি না থাকায় চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে জীববৈচিত্র্য। জানা যায়, ১৯৯৬ সাল থেকে গোমতী নদীতে চর পড়া শুরু হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে চরের সংখ্যা। অনেকে মনে করছেন, বছর বছর যেভাবে পানিশূন্যতা দেখা দিচ্ছে তাতে হেঁটে নদী পার হওয়া যাবে-সেদিন বেশি দূরে নয়। আলমগীর নামে  স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী বলেন, এক সময় গোমতীর পানি আর প্রবল ঢেউ দেখে ভয় লাগত। কখনো কখনো বালুুচর দেখা গেলেও তার মধ্য দিয়েই দিয়ে যেত স্রোতধারা। এখন নদীর যে অবস্থা তাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে গোমতী হবে রূপকথার মতো। অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন, মেঘনা-গোমতী নদীর মোহনায় ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নাব্য ফিরিয়ে আনলে আগের মতোই দাউদকান্দি ঘাটে ভিড়বে জাহাজ, স্টিমার, লঞ্চ, কার্গো, বলগেটসহ বিভিন্ন নৌযান। আবার কর্মসংস্থান হবে শ্রমিকদের। দূর হবে তাদের অর্থসংকট। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) দাউদকান্দি অফিস জানায়, নৌমন্ত্রণালয়ের নদী খনন শাখা থেকে আমাদের কাছে মতামত চেয়েছিল। আমরা নদীটি খননের প্রয়োজন বলে মত দিয়েছি।

সর্বশেষ খবর