রবিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

নোয়াখালীতে তরমুজ ফলনে বিপর্যয়

ভাইরাস ও পোকার আক্রমণকে দায়ী করছেন চাষিরা

আকবর হোসেন সোহাগ, নোয়াখালী

নোয়াখালীতে তরমুজ ফলনে বিপর্যয়

নোয়াখালীর একটি খেতে পোকার আক্রমণে নষ্ট হয়ে যাওয়া তরমুজ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

গত কয়েক বছর অতিবৃষ্টি আবার কখনো অনাবৃষ্টিতে নোয়াখালীর চরাঞ্চলে তরমুজের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চলতি বছর জেলায় তরমুজের আবাদ হয়েছে গতবারের চেয়ে দ্বিগুণ। তবে পোকমাকড় ও ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য সংশ্লিষ্টদের তদারকির অভাবে এবারও তরমুজের ফলন বিপর্যয় হয়েছে। ফলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন অধিকাংশ কৃষক। তবে এমন বিপর্যয়কে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব বলছেন সংশ্লিষ্টরা।  নোয়াখালীর তরমুজ অন্য জেলার চেয়ে মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় ভোক্তা পর্যায়ে চাহিদা এবং দাম দুটোই বেশি। দেড় দশক ধরে নোয়াখালীর সুবর্ণচর, হাতিয়া, কোম্পানীগঞ্জ ও সদরে রবি মৌসুমে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি ব্যাপকভাবে তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন কৃষকরা। গত কয়েক বছরে অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, ভাইরাসের আক্রমণ, নিম্নমানের বীজ ও কীটনাশকের কারণে অধিকাংশ তরমুজ আকারে ছোট হয়েছে। অধিক লাভের আশায় গত বছরের চেয়ে এবার দ্বিগুণ পরিমাণ জমিতে তরমুজের আবাদ হলেও ফলন বিপর্যয় ঠেকানো যায়নি। তবে ভালো মানের বীজ, সার ও কীটনাশক এবং সঠিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করায় অল্প সংখ্যক কৃষক ভালো ফলন পেয়েছন বলে জানা গেছে। কয়েক বছরের ক্ষতি তারা কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারলেও এ সংখ্যা অনেক কম। এদিকে বাজারে তরমুজের উচ্চমূল্য হলেও সিন্ডিকেটের কারণে নায্যমূল্য পাচ্ছে না কৃষকরা। কৃষিবিদ শিবভ্রত ভৌমিক জানান, জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে প্রকৃতির বিরূপ আচারণে শুধু তরমুজ নয়, অন্যান্য রবিশষ্য উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে জৈব পদ্ধতিতে এবং কৃষকদের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে শস্য আবাদের পরামর্শ দেন তিনি। সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ বলেন, সম্প্রতি প্রাকৃতিক দুর্যোগে বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তরমুজ আবাদে কৃষকের আগ্রহ হারাচ্ছেন। তিনি জানান, কখনো অনাবৃষ্টি, কখনো অতিবৃষ্টি আবার খরা-এতে ফসলে বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই বাড়ছে। ফলে উৎপাদনে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। জানা যায়, এ বছর নোয়াখালী জেলায় তরমুজ আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ৮৭৬ হেক্টর জমিতে যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। এরমধ্যে শুধু সুবর্ণচর উপজেলায়ই চাষ হয়েছে সাড়ে চার হাজার হেক্টর জমিতে। এখনই পরিবেশ-প্রতিবেশ দূষণ রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রযুক্তিগত সহায়তাসহ পর্যাপ্ত প্রণোদনা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন কৃষক ও কৃষি সংশ্লিষ্টরা।

সর্বশেষ খবর