সোমবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

নেত্রকোনায় ফসল নিয়ে শঙ্কায় কৃষক

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

নেত্রকোনায় ফসল  নিয়ে শঙ্কায় কৃষক

নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে দ্রুতগতিতে বাড়ছে ধনু নদের পানি। গতকাল দুপুর থেকে বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে চরম ঝুঁকিতে পড়েছে খালিয়াজুরী উপজেলার ফাটলকৃত কির্তনখোলাসহ বিভিন্ন হাওরের ফসলরক্ষা বেড়িবাঁধ। যে কোনো সময় বাঁধ ভেঙে হাওরের ফসল তলিয়ে যাওয়ার অশঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। সাত কিলোমিটার কির্তনখোলা বাঁধটি ভেঙে গেলে শুধু নেত্রকোনাই নয়, সুনামগঞ্জের শাল্লার হাওরের ফসলও তলিয়ে যাবে বলে জানান কৃষকরা। যে কারণে পাঁচ কিলোমিাটর হেঁটে এসে প্রতিদিন বাঁধ মেরামত করছেন বলে জানান শাল্লা থেকে আসা কৃষকরা। তারা বলেন, ৩০ থেকে ৪০ জন প্রতিদিন আসছেন বাঁধে কাজ করতে। এতে কিছু পারিশ্রমিকও পাচ্ছেন। অন্যদিকে নিজেদের কষ্টের ফসল রক্ষার চেষ্টাও করছেন। এমন অবস্থায় কয়েকদিন ধরেই তারা এ বাঁধ রক্ষায় আবারও প্রাণপণ চেষ্টা করছেন। যদিও বাঁধগুলো এখনো অক্ষত রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে নতুন করে পাহাড়ি ঢলে শনিবার বিকাল থেকে দ্রুতগতিতে হাওরাঞ্চল খালিয়াজুরীর বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। গতকাল বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় যেকোনো সময় বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আতঙ্কে মানুষ। তাই স্থানীয় প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় বস্তায় ভরে মাটি দেওয়া হচ্ছে বাঁধে। কারণ এ বাঁধ নেত্রকোনার হাওরাঞ্চল-মদন-মোহনগঞ্জ খালিয়াজুরী ছাড়াও সুনামগঞ্জের দিরাই, শাল্লার কিছু হাওরের জমি রক্ষা করে। কৃষকরা আরও জানান, আগাম জাতের ব্রি-২৮ ধান পাকলেও হাইব্রিড-২৯-সহ অন্যান্য ধান পরিপক্ব হতে এখনো সময় লাগবে আরও আট থেকে ১০ দিন। তারপরও ইতোমধ্যে তারা কাঁচা ধানই কেটে ফেলছেন। খালিয়াজুরী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ এম আরিফুল ইসলাম জানান, তারা বাঁধের ওপরই রয়েছেন। পানি ছুঁই ছুঁই করছে। বাঁধ এখনো টিকিয়ে রেখেছেন। বাকি চেষ্টাও করে যাচ্ছেন। জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার ১ লাখ ৮৪ হাজার ৮২৮ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে শুধু হাওরেই আবাদ হয়েছে ৪১ হাজার হেক্টর। ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত কাঁচা-পাকা প্রায় ৫৫ ভাগ ধান কাটা হয়েছে দাবি করেন তারা। অন্যদিকে মাঠের বাস্তবতায় এখনো ধান পরিপূর্ণ হতে এক সপ্তাহের ওপরে লাগবে বলে কৃষকরা জানান। তারপরও কাঁচা ধানই কাটছেন তারা। যে কারণে ধানের দাম কমসহ ওজনে কম হচ্ছে। সব মিলিয়ে কৃষকরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে রয়েছেন বলে জানান মল্লিকপুর গ্রামের জলি তালুকদার, নিবারুণ তালুকদারসহ হাওরের কৃষকরা।

সর্বশেষ খবর