মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

নওগাঁয় খাল পুনঃখনন না করায় বেকায়দায় ৪ হাজার কৃষক

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

নওগাঁয় খাল পুনঃখনন না করায় বেকায়দায় ৪ হাজার কৃষক

নওগাঁর ধামইরহাটে ঘুকসী ও মঙ্গলখাল পুনর্খনন না করায় ৪ হাজার কৃষক বেকায়দায় পড়েছে। খালের দুই পাড়ের ৪ হাজার কৃষক পূর্বে খালে পানি সংরক্ষণ করে সেই পানি দিয়ে রবিশস্যসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল ফলাতেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে খালগুলো পুনর্খনন না করায় খালে পলি পড়েছে। এতে বর্ষার শেষে পানি ধরে রাখা যায় না। ফলে খাল দুটি কৃষকের আশীর্বাদে পরিণত না হয়ে অভিশাপে পরিণত হয়েছে। জানা গেছে, এলজিইডির টেইসই ক্ষুদ্রাকার পানিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১৭ বছর পূর্বে ঘুকসি ও মঙ্গলখাল খনন করা হয়। মঙ্গলখাল ভারত সীমান্ত পেরিয়ে প্রায় ১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ঘুকসি খাড়ি মিলিত হয়েছে। অন্যদিকে ঘুকসী খালও ভারত থেকে বের হয়ে ত্রিমোহনীতে ছোট যমুনা নদীতে মিলিত হয়েছে। এ খালের দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে ১৪ কিলোমিটার। বিগত ২০১৯-২০ অর্থবছরে এলজিইডির উদ্যোগে মঙ্গলখালের তিন কিলোমিটার ১০০ মিটার পুনর্খনন করা হয়। অন্যদিকে ঘুকসি খালের সাড়ে তিন কিলোমিটার পুনর্খনন করা হয়। বর্তমানে খাল দুটির খননকৃত অংশে বর্ষার শেষে স্লুইস গেট বন্ধ করে বর্ষা মৌসুমে পানি সংরক্ষণ করে রবি  মৌসুমে বিভিন্ন ধরনের শস্যসহ বোরো ধানবীজ বপন করা হয়। কৃষক সহজে খালের পানি ব্যবহার করে এসব খেতে পানি সেচ দিতে পারে। এ ছাড়া খালে প্রচুর পানি থাকায় হাঁস পালন ও বিশেষ করে দেশি মাছ প্রাকৃতিকভাবে চাষ হচ্ছে। কিন্তু খালের বাকি অংশ পুনর্খনন না করায় পানির অভাবে খাল শুকিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে। মঙ্গলখালের উত্তর পাড়ের কৃষানি ফরিদা খাতুন ও ঘুকসি খালের পূর্ব পাড়ের কৃষানি রুপালি পাহান বলেন, আগে খালে শুষ্ক  মৌসুমে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকত। এ পানিতে আমরা হাঁস পালন করতাম। কিন্তু খাল খনন না করায় পলি পড়ে খাল ভরে গেছে। এতে আর পানি থাকে না। এর ফলে আমাদের হাঁস পালন করা বন্ধ হয়েছে। মঙ্গলখালের পশ্চিম পাড়ের কৃষক আজিজার রহমান এবং ঘুকসি খালের পশ্চিম পাড়ের কৃষক ফারাজ কল্পন ও বাবু তেওয়ারী বলেন, এ খালের পানি ব্যবহার করে আলু, সরিষা, গমসহ শীতকালীন শাকসবজি ও বোরো বীজতলায় পানি সেচ দেওয়া হতো। কিন্তু দীর্ঘদিন খান পুনর্খনন না করায় খালে আর পানি থাকে না। বর্তমান খাল মরা খালে পরিণত হয়েছে। ঘুকসি খালের সভাপতি কৃষক আবদুল হাকিম বলেন, ঘুকসি খাল সমিতিতে ৩৯০ জন সদস্য রয়েছে। সদস্যরা খালের পানি ব্যবহার করে হাঁস পালন, মৎস্য চাষ ও অন্যান্য ফসল উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু খাল খনন না করায় পানি ধরে রাখা যায় না। এতে খালের দুই পাড়ের কৃষকরা বেকায়দায় পড়েছেন।

এলজিইডি ধামইরহাট উপজেলা প্রকৌশলী আলী হোসেন বলেন, খাল দুটির পলি জমা হওয়া অংশের পুনর্খনন করা হলে কার্যকরভাবে পানি ধারণ সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে কৃষি, মৎস্য ও গবাদি পশুপালনের ক্ষেত্রও তৈরি হবে। ফলে প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য প্রকল্প এলাকার জনগণের দারিদ্র্য বিমোচন কিছুটা হলেও সম্ভব হবে।

সর্বশেষ খবর