মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

পরকীয়া সন্দেহে বন্ধুকে গলা কেটে হত্যা

চাঁদপুর প্রতিনিধি

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় আলোচিত ফরিদ উদ্দিন (২৫) হত্যার ঘটনার আসল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। তাদের হাতে আটক দুই আসামি হত্যার ঘটনা স্বীকার করেছেন। তারা বলেছে, ফরিদ উদ্দিন ভুঁইয়ার মানিব্যাগে ১ হাজার টাকার ১০টি নতুন নোট দেখে লোভ এবং পূর্বশত্রুতার জেরে বন্ধু ফরিদ উদ্দিনকে হত্যা করা হয়। এর আগে আবদুর রহমানকে (২২) সঙ্গে নিয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী রাতে ঘরে ঢুকে দা দিয়ে কুপিয়ে খুন করে ফরিদ উদ্দিনকে। গতকাল দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান, পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ। গত ১৫ এপ্রিল রাতে উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নে ভুঁইয়াবাড়ির নিজ বসতঘর থেকে ফরিদ উদ্দিনের গলা কাটা লাশ পুলিশ উদ্ধার করে। গতকাল অভিযুক্তদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার উল্লেখ করেন, ফরিদ উদ্দিন ভুঁইয়ার হত্যার ঘটনায় তার বোনজামাই দুলাল চৌধুরী অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা  করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. রুবেল ফরাজী ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং আসামিদের গ্রেফতারে তৎপরতা চালান। প্রথমে আসামি আবদুর রহমানকে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আবদুর রহমান ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরে অপর আসামি সালাউদ্দিনের নাম বলে দেয়। তার সাক্ষ্য অনুযায়ী মো. সালাউদ্দিনকে ফরিদগঞ্জের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। আসামিরা ঘটনা স্বীকার করে জানান, মৃত ফরিদ উদ্দিন ভুঁইয়া ও আসামি সালাউদ্দিন ভুঁইয়া একই সঙ্গে চলাফেরা করত। সালাউদ্দিন ভুঁইয়া পেশায় একজন ড্রাইভার। তার দুই স্ত্রীর মধ্যে একজন চট্টগ্রাম ও অপরজন ফরিদগঞ্জ থাকেন। সালাউদ্দিনের দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে মৃত ফরিদ উদ্দিনের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ করত। ঘটনার আগের রাতে ফরিদ উদ্দিন ও সালাউদ্দিন বাড়ির পাশে দোকানে আইপিএল খেলা দেখছিল। এ সময় সালাউদ্দিন ফরিদ উদ্দিনের মানি ব্যাগে ১ হাজার টাকার ১০টি নতুন নোট দেখতে পায়। এই নতুন টাকা ও পরকীয়ার সম্পর্কের জেরে পার্শ্ববর্তী আবদুর রহমানকে নিয়ে ফরিদ উদ্দিনকে হত্যার পরিকল্পনা করে সালাউদ্দিন। ঘটনার রাতে তারা ফরিদের ঘরে ঢুকে দরজায় নক করে ধারাল দা নিয়ে ওত পেতে থাকে। ফরিদ দরজা খুলতেই তারা ফরিদের ঘাড়ে ধারালো দা দিয়ে কোপ দিলে ফরিদ মাটিতে লুটিয়ে পড়লে। তারা মৃতদেহ গুম করার জন্য শয়নকক্ষে তোষকের ভিতর প্যাঁচিয়ে রাখে। আসামিরা তার ব্যবহৃত মোবাইল এবং ১০ হাজার টাকার নতুন নোট নিয়ে চলে যায়। সালাউদ্দিন তার সহযোগী আবদুর রহমানকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে ঢাকায় চলে যান।

সর্বশেষ খবর