সৈয়দপুরে খড়খড়িয়া নদীর শহর রক্ষাবাঁধটি নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। বাঁধের ১৫ কিলোমিটারজুড়ে কমপক্ষে ২০০ স্থানে ছোট-বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। বাঁধের ওপর দিয়ে বালুবাহী ট্রাক চলাচল এবং পাশের মাটি কেটে নেওয়ায় এ অবস্থা হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। আসন্ন বর্ষা মৌসুমে পানির স্রোতে বাঁধের কোথাও ভাঙন দেখা দিলে মারাত্মক বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে জানান এলাকাবাসী। সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বাঁধের কারণে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্র্ণ স্থাপনা বর্ষা মৌসুমে বন্যা থেকে রক্ষা পায়। বাঁধ ভেঙে গেলে ওইসব স্থাপনা হুমকির মুখে পড়বে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক মানের সৈয়দপুর বিমানবন্দর, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা, ১৫০ মেগাওয়াট গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, বাংলাদেশ আর্মি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সৈয়দপুর (বাউস্ট), সৈয়দপুর সরকারি কলেজ, বিসিক শিল্পনগরী, সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, সৈয়দপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং মিলিটারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ (ইএমই) ছোট-মাঝারি শিল্প কারখানা ভয়াবহ প্লাবন জোনে অবস্থান করছে। বাঁধ ভেঙে বন্যার পানি ঢুকলে ওইসব স্থাপনা তিন থেকে পাঁচ ফুট তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ভৌগলিক অবস্থানের কারণে নদীর প্লাবন স্তর থেকে সৈয়দপুর শহরের ওই স্থাপনাগুলো স্থানভেদে তিন থেকে ছয় ফুট নিচে অবস্থান করছে। নদীর নাব্য হ্রাস পাওয়ায় বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে আসা ঢলে খড়খড়িয়া নদী আগের মতো আর পানি ধারণ করতে পারে না। ফলে একটুতে বাঁধ উপচে বন্যার পানি শহরের দিকে প্রবাহিত হয়। স্থানীয় বাসিন্দা তৈয়ব আলী বলেন, শহর রক্ষাবাঁধটি কংক্রিট দিয়ে বাঁধাই করা হলে এ জনপদের মানুষ বর্ষাকালে নিশ্চিন্ত ঘুমাতে পারবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবোর) সৈয়দপুর পওর বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আবু সৈয়দ আমিনুর রশিদ বলেন, প্রতি বছর বর্ষায় বন্যার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করার আগেই খড়খড়িয়া নদীর বাঁধ উপচে শহরে প্রবেশ করে। সে সময় জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ দিয়ে পানি আটকে সরকারি বেসরকারি স্থাপনা রক্ষা করা হয়। পাহাড়ি ঢলের ফলে প্রতি বছর চার-পাঁচবার বিপদসীমা অতিক্রম করে বন্যার পানি। তার মতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডেল্টা প্লান বাস্তবায়নে পাকা ব্লক দিয়ে বাঁধটি নির্মাণ করা হলে অন্তত ১০০ বছরে বাঁধের কোনো ক্ষতি হবে না।
পাউবোর সৈয়দপুর পওর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান বলেন, বাঁধটি টেকসই করার জন্য ডিপিপির প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছি। সঠিক সময়ে তা বাস্তবায়ন হবে।