শুক্রবার, ২২ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

উপকূলে সুপেয় পানির সংকট

মনিরুল ইসলাম মনি, সাতক্ষীরা

উপকূলে সুপেয় পানির সংকট

পানি সংগ্রহে দীর্ঘ লাইন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

সাতক্ষীরার উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগর ও আশাশুনি। এ দুটি উপজেলায় প্রায় ৭ লাখ মানুষের বাস। এখানকার প্রধান সমস্যা বিশুদ্ধ পানির সংকট। শুকনো মৌসুম এলেই উপকূলজুড়ে প্রতি বছর খাবার পানির জন্য চলে হাহাকার। এখন দুই উপজেলার চারিদিকে পানি থাকলেও খাবার উপযোগী পানি নেই কোথাও, সবই লবণাক্ত। চৈত্রের খড়ায় আগেই প্রাকৃতিক উৎসগুলো শুকিয়ে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব, নদ-নদীর পানিতে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় নষ্ট হয়েছে সুপেয় পানির আধার। বর্ষা মৌসুমে ধরে রাখা খাবার পানির পুকুরগুলোও শুকিয়ে গেছে। বাড়ির গৃহিণীসহ অন্য সদস্যরা কলস নিয়ে মাইলের পর মাইল হেঁটে পানি সংগ্রহ করছেন। সূত্র জানায়, প্রলয়ঙ্ককারী ঘূর্ণিঝড় আইলার পর থেকে দীর্ঘ ১১ বছর ধরে চলতে থাকা এ সমস্যা সাতক্ষীরার উপকূলে মানুষের মধ্যে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। এখনো উপকূলের যেসব পুকুরে ধরে রাখা সামান্য বৃষ্টির পানি রয়েছে সেখান থেকে পানি সংগ্রহ করতে কয়েক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে নারী-পুরুষ ও শিশুদের। এরপর পানি পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে লাইনে। পানি সংগ্রহের জন্য কোনো সময় পুরো দিন পার হয়ে যায় তাদের। অনেকে বাধ্য হয়ে নিত্যদিনের কাজে লবণাক্ত পানি ব্যবহার করে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী সাতক্ষীরার ১৩ শতাংশ মানুষ খাবার পানির সংকটে রয়েছে বলে জানানো হলেও বাস্তবে এই চিত্র আরও ভয়াবহ। পানি সংকট নিরসনে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে উপকূলজুড়ে পুকুর খনন, টিউবওয়েল স্থাপন, পন্ডস অ্যান্ড ফিল্টার (পিএসএফ) স্থাপন এবং বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করলেও কোনো ভাবেই সংকট দূর হচ্ছে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। সাতক্ষীরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতি লিটার পানিতে ০ থেকে ১ হাজার মিলিগ্রাম লবণ থাকলে সেই পানি পানযোগ্য। উপকূলে প্রতি লিটারে ১ হাজার থেকে ১০ হাজার মিলিগ্রাম লবণ রয়েছে। শ্যামনগরের ইউএনও আক্তারুজ্জামান বলেন, এ অঞ্চলে বিশুদ্ধ পানির সংকট নিরসনে গভীর নলকূপ ও বড় ট্যাংকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। খনন করা হয়েছে পুকুর। আশা করি বৃষ্টি এলে কিছুটা হলেও সমস্যা দূর হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর