সোমবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

গাইবান্ধায় ইটভাটার ধোঁয়ায় পুড়ছে ধান

পুড়ে গেছে আম-কাঁঠাল চালতা, জলপাইসহ সব গাছের পাতা

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধায় ইটভাটার ধোঁয়ায় পুড়ছে ধান

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় অনুমোদনবিহীন ইটভাটার ধোঁয়ায় ৫০ বিঘা জমির বোরো ধান পুড়ে গেছে। এ উপজেলায় অনুমোদন ছাড়াই বেশ কয়েকটি  ইটভাটা চলছে গত ৭ বছর থেকে। ব্যাপক ক্ষতি হলেও ওইসব ইটভাটার মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় কৃষকরা মুখ খোলার সাহস পান না। এদিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে প্রশাসন থেকে। কাশেম উদ্দিন নামের কৃষক জানান, ‘এই  উপজেলায় কয়েকটি ইটভাটা পদুমশহর ইউনিয়নের বাজার এলাকায় এক জনপ্রতিনিধির জমিতে করা হয়েছে। কৃষি জমিতে ইটভাটা করার নিয়ম না থাকলেও স্থানীয় এক ইউপি মেম্বার প্রভাব খাটিয়ে ইটভাটা তৈরিতে সাহায্য করে ৭ বছরে ওই গ্রামসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের চাষাবাদে ব্যাপক ক্ষতি করলেও আমরা ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারছি না। কৃষক  সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এসব ইটভাটার কারণে আমরা ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতিতে পড়েছি। এ বছর এই গ্রামে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ বিঘা জমির ধান পুড়ে গেছে। সিরাজুল ইসলামের মতো এই গ্রামের ময়নুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, মহি বেগমসহ প্রায় শতাধিক বোরোচাষির একই অবস্থা। চাষি হাসিবুর ইসলাম বলেন ‘ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসের কারণে আমার ৫ বিঘা জমির বোরোধান পুড়ে গেছে। এ গ্রামের ব্যবসায়ী হাফিজউদ্দিন বলেন, এ উপজেলায় বেশ কয়েকটি ইটভাটা থেকে প্রতিনিয়ত কালো ধোঁয়া নির্গত হচ্ছে। এতে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। আমরা প্রতিকার চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করেছি। স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ী কফিলউদ্দিন বলেন, ইটভাটার কালো ধোঁয়ার কারণে দিনের বেলায় এ বাজারে ক্রেতাদের আনাগোনা কম থাকে। এতে আমাদের ব্যবসা ক্ষতি মুখে পড়ছে। এ ছাড়াও আম-কাঁঠাল, চালতা, জলপাই গাছসহ বাঁশঝাড়ের সব পাতা পুড়ে গেছে। জানতে চাইলে ওই জনপ্রতিনিধি কিছু বলতে রাজি হননি। সাঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাদেকুজ্জামান বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ইটভাটাটির কারণে কি পরিমাণ জমির ক্ষতি হয়েছে তার জরিপ চলছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে কথা বলেছি।’ সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, ‘জেলা প্রশাসক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইটভাটাটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৩৮ জন কৃষকের তালিকা এসেছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করব। সাঘাটা ইউএনও বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, শিগগিরই অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদের কার্যক্রম শুরু হবে। কোনো অবস্থাতেই এ উপজেলায় অবৈধ ইটভাটা থাকবে না। এ ব্যাপারে প্রশাসন নজরদারি বাড়াবে।

সর্বশেষ খবর