আড়াইহাজারে গ্রাম্য সালিশ অমান্য করায় গ্রাম্য মাতব্বররা ক্ষিপ্ত হয়ে ইউনিয়ন থেকে মধ্যারচর গ্রামবাসীকে বাকি ১৩ গ্রামে চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে সড়কে বাঁশ দিয়ে অবরুদ্ধ করে দিয়েছেন। গত রবিবার রাত থেকে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর থেকে মধ্যারচর গ্রামবাসী দুর্ভোগে পড়েন। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে উপজেলাব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। জানা গেছে, গত বুধবার কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের ঝাউকান্দির সোহেল অটো নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। পেছনে মধ্যাচরের জসিম তার মোটরসাইকেলে অটোকে ধাক্কা দেন। এই নিয়ে তর্কবিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে ওই দিনই জসিম মোটরসাইকেল নিয়ে ঝাউকান্দি গেলে সোহেলের লোকজন তাকে মারধর করে। এ খবর মধ্যারচর গ্রামে পৌঁছলে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে ওই ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ওবায়দুল হক ইসলাম বাদল ও আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিষয়টি মীমাংসার জন্য গত রবিবার রাতে ইউপি চেয়ারম্যান ফাইজুল হক ডালিমের বাড়িতে মধ্যারচর ও ঝাউকান্দির লোকজন উভয় পক্ষকে নিয়ে সালিশে বসেন এবং রায়ে মোটরসাইকেলের ক্ষতিপূরণসহ সোহেলকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ওবায়দুল ইসলাম বাদল, আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জুর হোসেন, যুবলীগ নেতা সাত্তার, জয়নাল, ইউপি সদস্য হক সাহেবসহ ৯/১০ জন গ্রাম্য মাতব্বর। এ রায় প্রত্যাখ্যান করে মধ্যাচরের লোকজন সালিশ থেকে উঠে পড়ে। এর জের ধরে ঝাউকান্দিসহ ইউনিয়নে বাকি ১৩ গ্রামে মধ্যাচরের লোকজন যাতে প্রবেশ করতে না পারে রবিবার মধ্যরাত থেকে ঝাউকান্দি সড়কে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে।
মধ্যাচরের বাসিন্দা নাজমুল জানান, ব্যারিকেডের কারণে আমরা বাজারসহ আশপাশে যেতে পারছি না। অন্যদিকে ব্যারিকেড দেওয়ার মধ্যারচর ট্রলার ঘাটও বন্ধ হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ওবায়দুল ইসলাম বাদল বলেন, অবরুদ্ধ করিনি। সমাজে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বিচারকরা কয়েক দিনের জন্য রাস্তা চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। ২/৩ দিনের মধ্য ঠিক হয়ে যাবে। সব গ্রাম আমাদেরই। কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মঞ্জুর হোসেন বলেন, মধ্যারচরের লোকজন সালিশ অমান্য করার চেষ্টা করছে। তার জন্য এই ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। আড়াইহাজার থানার ওসি আনিচুর রহমান মোল্লা জানান, ঘটনাটি জানার পর কালাপাহাড়িয়া ফাঁড়ির ইনচার্জকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। আমাদের কথা না মানলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
