শিরোনাম
বুধবার, ১১ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

ভাঙন রক্ষা প্রকল্পে নয়ছয়

নেই সংশ্লিষ্টদের নজরদারি ॥ শঙ্কায় স্থানীয়রা

সৈয়দ বয়তুল আলী, মৌলভীবাজার

ভাঙন রক্ষা প্রকল্পে নয়ছয়

অরক্ষিত পড়ে আছে জিও ব্যাগ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

মনু নদের ভাঙন রোধে এবং বন্যার স্থায়ী সমাধানে একনেকে হাজার কোটি টাকার ‘মনুর ভাঙন থেকে কুলাউড়া, রাজনগর ও মৌলভীবাজার সদর রক্ষা’ প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শুরু হয় প্রকল্পের কাজ। অভিযোগ রয়েছে, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিয়ম অনুযায়ী কাজ না করে সরকারের এই মেগা প্রকল্পের অর্থ নয়ছয়ে ব্যস্ত। তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পের দুই বছর পার হলেও চোখে পড়েনি দৃশ্যমান অগ্রগতি। স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন আগামী বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে পাহাড়ি ঢল এলে তাদের বড় ধরনের ক্ষতি হবে। ভেস্তে যাবে সরকারের এই মহতি উদ্যোগ। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, ‘মনু নদের ভাঙন থেকে কুলাউড়া, রাজনগর ও মৌলভীবাজার সদর রক্ষা’ নামে ওই প্রকল্প ২০২০ সালের জুনে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন হয়। ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৯৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা। ২০২৩ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু দুই বছরে কাজ হয়েছে মাত্র ২৩ শতাংশ। অনুসন্ধানে জানা যায়, ব্লক নির্মাণে নির্ধারিত (সিলেকশন গ্রেড) বালু ও পাথর ব্যবহারের শর্ত থাকলেও স্থানীয়ভাবে নদী থেকে তোলা বালু ও নিম্নমানের পাথর ব্যবহার হচ্ছে। নির্মিত ব্লকগুলো নিয়ে আশঙ্কায় আছেন স্থানীয়রা। আবার অনেক জায়গায় নদী থেকে কাদা মিশ্রিত বালু তুলে জিও ব্যাগ ভরার অভিযোগ রয়েছে। প্রকল্পে ঘানি ব্যাগ ব্যবহারের কথা থাকলেও কোথাও এর দেখা মেলেনি। অপরিকল্পিতভাবে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে নদীতে। ফলে এগুলো বালুর নিচে তলিয়ে গেছে। দস্তিদারেরচক, টগরপুর, আদিনাবাদ, খাসপ্রেমনগর, ভোলানগর-মিঠিপুর ও প্রেমনগর অংশে দেখা যায় এই চিত্র। রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বলেন, আমার ইউনিয়নে ১০টি প্যাকেজে কাজ চলছে। কাজগুলো মানসম্মত হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেও সমাধান মিলছে না। এই কাজ নিয়ে আমরা শঙ্কিত। রাজনগর উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মিলন বখত বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাদের ইচ্ছামতো কাজ করছে। পাউবোর দায়িত্বরত কর্মকর্তারা স্পটে আসেন না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মুন ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী মিজানুর রহমান বলেন, ওয়ার্ক অর্ডারের চেয়ে আরও ভালো মানের কাজ হচ্ছে। আমার সাইটের ব্লক বুয়েট পরীক্ষা করে স্বীকৃতি দিয়েছে। এলাকার মানুষ অনেক কিছু বলতে পারে। এম এম বিল্ডার্সের ম্যানেজার সুহান আলী নিম্নমানের পাথরের কথা স্বীকার করে বলেন, এই পাথর দিয়ে আপাতত ব্লক তৈরি বন্ধ রাখা হয়েছে। নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, কাজের গুণগতমান বজায় রাখার জন্য সর্বদা তৎপর। টাস্কফোর্সের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া প্রকল্পের কোনো কাজ চূড়ান্ত হচ্ছে না।

সর্বশেষ খবর