রবিবার, ১৫ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

নতুন দালালদের তৎপরতায় কিডনির হাট ফের চাঙা

দালাল চক্রের সাত সদস্য গ্রেফতার

জয়পুরহাট প্রতিনিধি

প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কঠর নজরদারিতে কিছু সময় ঝিমিয়ে পড়েছিল জয়পুরহাটের সেই আলোচিত কালাই উপজেলার কিডনি বেচাকেনার হাট। বর্তমানে নতুন নতুন দালালদের তৎপরতায় আবারও চাঙা হয়ে উঠেছে সেই হাট। কিডনির হাট চাঙা হওয়াতে নতুন করে অভিযান শুরু করে পুলিশ। গত শুক্রবার দিবাগত রাতে জয়পুরহাটের কালাই ও পাঁচবিবি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে কিডনি বেচাকেনা দালাল চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মাছুম আহম্মদ ভূঞা। আটককৃত দালাল চক্রের সদস্যরা হলেন, কালাই উপজেলার সাহারুল ইসলাম (৩৮), একই উপজেলার উলিপুর গ্রামের ফরহাদ হোসেন ওরফে চপল (৩১), জয়পুর বহুতি গ্রামের মোশারফ হোসেন (৫৪), ভেরেন্ডি গ্রামের শাহারুল ইসলাম (৩৫), জয়পুর বহুতি গ্রামের মোকাররম হোসেন (৫৩), দুর্গাপুর গ্রামের সাইদুল ইসলাম ফকির (৪৫) এবং পাঁচবিবি উপজেলার গোড়না আবাসনের সাদ্দাম হোসেন (৪০)। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মাছুম আহম্মদ ভূঞা সাংবাদিকদের জানান, আটককৃত দালালরা দীর্ঘদিন ধরে জয়পুরহাট জেলাসহ পার্শ্ববর্তী নওগাঁ, গাইবান্ধা, দিনাজপুর এলাকার নিরীহ, ঋণগ্রস্ত ও হতদরিদ্র মানুষদের ফুসলিয়ে টাকার লোভ এবং অল্প সময়ে বড়লোক হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে নারী এবং পুরুষদের কিডনি বিক্রি করে আসছিলেন। এসব নিরীহ মানুষরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দালালদের খপ্পরে পরে ৪/৫ লাখ টাকায় চুক্তিতে তাদের মূল্যবান কিডনি বিক্রি করে দেন। ভারত ও দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে গিয়ে তাদের কিডনি দিয়ে নামমাত্র চিকিৎসা নিয়ে যখন দেশে ফিরেন, তখন দালালরা বিমাবন্দরেই তাদের হাতে ১/২ লাখ টাকা হাতে ধরে দিয়ে বিদায় করেন। কিডনি দাতারা নিজের অঙ্গ বিক্রি করে ঝুঁকি নিয়ে জীবন অতিবাহিত করলেও লাভবান হচ্ছেন এসব দালালরা। আবার নিজের কিডনি বিক্রি করে প্রতারিত হয়ে নতুন করে দালাল বনে যাচ্ছেন এসব কিডনি দাতারা। তিনি আরও বলেন, আটককৃত দালালরা কিডনি বেচাকেনার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন বলে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। কিডনি বেচাকেনা প্রতিরোধে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। অল্প সময়ের মধ্যে অবৈধভাবে কিডনি বিক্রি শতভাগ বন্ধ করা না গেলেও অনেকটাই বন্ধ করা সম্ভব হবে বলেও তিনি আশাবাদী। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ফারজানা হোসেন, সদর সার্কেল মোসফেকুর রহমান, পাঁচবিবি সার্কেল ইশতিয়াক আলমসহ পুলিশের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা।

 

সর্বশেষ খবর