এমপিওভুক্তির দাবিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন দেশের বেসরকারি কলেজ সমূহের অনার্স ও মাস্টার্সের শিক্ষকরা। গতকাল সকাল হতে এ কর্মসূচি পালন শুরু করে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত অবস্থান করছিলেন তারা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এ অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন নেতৃবৃন্দ। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) গাছা থানার ওসি ইসমাইল হোসেন শিক্ষকদের কর্মসূচির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানায়, গতকাল সকালে দেশের বিভিন্ন বেসরকারি কলেজের অনার্স ও মাস্টার্সের শিক্ষকরা বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বোর্ডবাজারস্থিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এসে জড়ো হয়। এক পর্যায়ে তারা বেসরকারি কলেজ সমূহের অনার্স ও মাস্টার্সের শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির দাবিতে সকাল ১০টার দিকে তারা ওই ফটকের সামনে অনির্দিষ্টকালের কালের অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালন শুরু করেন। সন্ধ্যার পর পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করছিল। বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশনের উদ্যোগে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি হারুন-অর-রশিদ জানান, দীর্ঘ ২৯ বছর থেকে সারা দেশের প্রায় সাড়ে ৫ হাজার জন অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষককে জনবলে অন্তর্ভুক্তি না থাকার অজুহাতে সরকারি সুযোগ সুবিধার (এমপিও) বাইরে রাখা হয়েছে। এসব শিক্ষকদের বেসরকারি কলেজসমূহে বিধিমোতাবেক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের শতভাগ বেতন প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ কলেজ কর্তৃপক্ষ তা আমলে নিচ্ছে না। করোনাকালে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এসব শিক্ষকদের নামমাত্র বেতনও বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে পরিবার নিয়ে তারা মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। তিনি জানান, একই প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পেয়ে সদ্য জাতীয়করণকৃত কলেজের অনার্স-মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষকগণ ক্যাডার/নন-ক্যাডারভুক্ত হয়েছেন, ডিগ্রি ৩য় শিক্ষকগণ জনবলে না থাকার পরেও এমপিওভুক্ত হয়েছেন। অন্যদিকে কামিল (মাস্টার্স) শ্রেণির শিক্ষকগণও এমপিওভুক্ত হয়েছেন। অথচ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকগণও এনটিআরসিএ সনদধারী হয়েও জনবল ও এমপিও নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত না থাকায় এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না, যা চরম বৈষম্য এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী। তিনি বলেন, আমরা বেঁচে থাকার সুযোগ চাই। আমরা জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা, বিশ্ব মানবতার মা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষাবান্ধব সরকারের সুযোগ্য শিক্ষামন্ত্রীর বিশেষ নির্দেশনার মাধ্যমে প্রচলিত জনবল কাঠামো সংশোধন করে এমপিওভুক্তি চাই। এমপিওভুক্তির দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত গতকাল থেকে শুরু হওয়া এ অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
