সোমবার, ২৩ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

হুমকির মুখে সামুদ্রিক সম্পদ

উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশকর্মীরা

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

হুমকির মুখে সামুদ্রিক সম্পদ

বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক সম্পদ জলজ ও স্তন্যপায়ী প্রাণীর অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। একের পর এক মারা যাচ্ছে জলজ স্তন্যপায়ী প্রাণী ডলফিন, শুশুক আর কচ্ছপ। গতকাল সকালে জালে পেঁচানো অবস্থায় একটি জীবিত ডলফিন তীরে এলেও পরে এটি মারা যায়। এ ডলফিনটি নিয়ে এ বছর মোট ১০টি মৃত ডলফিন ও ১১টি কচ্ছপ কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে আসে। এর মধ্যে দুটি জীবিত কচ্ছপ উদ্ধার করে সমুদ্রে অবমুক্ত করা হয়েছে। কোনোটার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কোনোটার উপরিভাগের চামড়া উঠে গেছে। আবার কোনোটা অর্ধগলিত। মৃত ডলফিন ও কচ্ছপগুলো যাতে গন্ধ না ছড়ায় সে জন্য মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। এর আগে একাধিক মৃত প্রাণীর শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হলেও মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যায়নি। তবে বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশকর্মীদের ধারণা, আবাসস্থলের চরম বিপত্তির কারণ, জেলেদের জালে আটকে পড়া, ট্রলিং ফিসিংয়ের কারণে কিংবা জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে এসব বিরল প্রজাতির সামুদ্রিক সম্পদ মারা যেতে পারে। ইউএসএইডির অর্থায়নে পরিচালিত আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ফিশ, ইকোফিশ-২ তথ্যমতে এ বছর এ পর্যন্ত কুয়াকাটা সৈকতে ১০টি মৃত ডলফিন ভেসে এসেছে। এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে একটি, ফেব্রুয়ারিতে একটি, মার্চে দুটি, এপ্রিলে দুটি ও চলতি মে মাসে চারটি মৃত ডলফিন কুয়াকাটার সৈকতে ভেসে আসে। গত বছর সর্বমোট ১৮টি মৃত ডলফিন সৈকতে ভেসে এসেছে। এ ছাড়া এ বছর কুয়াকাটা সৈকতে ১১টি কচ্ছপ কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে আসে। এপ্রিলে চারটি মৃত ও একটি জীবিত এবং মার্চে চারটি। সর্বশেষে মে মাসে দুটি সামুদ্রিক কচ্ছপ ভেসে আসে। এর মধ্যে একটি মৃত, অপরটি জীবিত। মৃত কচ্ছপগুলোকে উদ্ধার করে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। জীবিত কচ্ছপ দুটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সাগরে অবমুক্ত করা হয়। এসব সামুদ্রিক প্রাণী একের পর এক মৃত অবস্থায় ভেসে আসার খবরে উদ্বিগ্ন পরিবেশবিদ ও সামুদ্রিক প্রাণী বিশেষজ্ঞরা। ইউএসএইডির অর্থায়নে পরিচালিত আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ফিশ, ইকোফিশ-২ প্রকল্পের সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেন, কুয়াকাটা সৈকতে একের পর এক মৃত ডলফিন, কচ্ছপ ভেসে আসছে তা নয়। এর আগের বছরগুলোতেও মৃত ডলফিন সৈকতে ভেসে এসেছিল। এ নিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত বলে আসছি, এসব সামুদ্রিক প্রাণী কেন মারা যাচ্ছে, তার সঠিক কারণ খুঁজে বের করতে উদ্যোগ নেওয়া দরকার বলে তিনি জানিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর