বৃহস্পতিবার, ২ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

পাহাড়ে মৌসুমি ফলের বাম্পার ফলন

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

পাহাড়ে মৌসুমি ফলের বাম্পার ফলন

টসটসে রসালো। দেখতে আকর্ষণীয়। খেতেও মজাদার। বলছি পার্বত্যাঞ্চলের আম, কাঁঠাল, লিচু ও আনারসসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফলের কথা। তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে এবারও মিশ্র মৌসুমি ফলের বাম্পার ফলন হয়েছে। মিশ্র ফলের রসালো গন্ধ সুবাস ছড়াচ্ছে পাহাড়ি জনপদে। এখন টসটসে কাঁচা-পাকা ফলে ভরপুর পাহাড়ের হাটবাজার। আম, কাঁঠাল, লিচু আর আনারসের সয়লাব পাহাড়জুড়ে। প্রতিদিন বসছে এসব মৌসুমি ফলের হাট। এতে ক্রেতাদের আকর্ষণ যেমন বেশি, তেমনি লাভবান হচ্ছেন বিক্রেতারা। দামও সাধ্যের মধ্যে। পার্বত্যাঞ্চলের গি  পেরিয়ে এসব বাহারি ফল বাজারজাত হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। রপ্তানির সঙ্গে  আয়ও বাড়ছে কৃষকদের। শুধু হাটবাজারে নয়, অনলাইনেও ব্যবসা জমে উঠেছে এসব মৌসুমি ফলের। রাঙামাটি জেলা কৃষি তথ্য সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য সূত্রে জানা গেছে, উপযুক্ত আবহাওয়ার কারণে পার্বত্যাঞ্চল অর্থাৎ তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের আম, কাঁঠাল, আনারস, লিচুর প্রচুর ফলন এসেছে। তার মধ্যে রাঙামাটি জেলা সদর, নানিয়ারচর, বিলাইছড়ি, কাপ্তাই, কাউখালী, বরকল, জুরাছড়ি, লংগদু, বাঘাইছড়ি, রাজস্থলী উপজেলাসহ বিভিন্ন জায়গায় এসব মিশ্র ফলের বাগান রয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। কৃষি বিভাগের পরিসংখ্যনের মতে, রাঙামাটি জেলায় মিশ্র ফলের আবাদ হয়েছে ৩৫ হাজার ৫৬৫ হেক্টর জমিতে। যা গেল বছরের চেয়ে দ্বিগুণ। তার মধ্যে আমের বাগান রয়েছে হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে। এসব বাগানে এবার প্রায় ৯.৮ মেট্রিক টন আমের উৎপাদন হয়েছে। তার মধ্যে রেগুয়াই ও আম্রপালির বাম্পার ফলন হয়েছে। এ ছাড়া পাহাড়ে ফলন ভালো হওয়ায় দেশি জাতের পরিবর্তে এখন অধিক চাষাবাদ হচ্ছে চায়না-২, চায়না-৩ জাতের লিচুর। বোম্বে লিচুর ফলনও হচ্ছে উচ্চ পরিমাণে। শুধু রাঙামাটি জেলায় লিচুর বাগান রয়েছে ১ হাজার ৮৮২ হেক্টর জমিতে। চলতি বছর লিচুর উৎপাদন হয়েছে ৯.৫০ মেট্টিক টন। একই সঙ্গে আনারস ৪ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৯.২ মেট্রিক টন। আর কাঁঠাল আবাদ হয়েছে ১০ হাজার ৮৬৩ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন হয়েছে প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টন। রাঙামাটির স্থানীয় মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী সাধন চাকমা জানান, মৌসুমি ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তবে দাম একটু কম। তবে লাভও অনেক। আনারসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ইতোমধ্যে বাজারে এসেছে- আম, কাঁঠাল, লিচু। কিন্তু পাকা ফল সংরক্ষণ করা খুব কঠিন। হিমাগার না থাকার কারণে পচে নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজর ফল। একই কথা জানালেন আরেক মিশ্র ফলবাগানি সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যা। তিনি বলেন, রাঙামাটি সদর উপজেলার মগবান ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সোনারাম কাউরিপাড়া এলাকায় প্রায় ১৫ একর হেক্টর জমিতে মিশ্র ফলের বাগান করেছেন তিনি। ফলও হয়েছে বাম্পার। তবে কৃষকদের চাহিদা মতো মিলছে দাম। অধিক লাভের আশায় কম দামে ফল কিনতে চায় ব্যাপারিরা। রাঙামাটি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক তপন কুমার পাল জানান, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাঙামাটির বিভিন্ন মৌসুমি ফলের ব্যাপক চাষাবাদ হচ্ছে। ফলনও হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রার অধিক।

সর্বশেষ খবর