শুক্রবার, ৩ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

কুচক্রী মহল ফায়দা হাসিল করতে চায়

মতবিনিময় সভায় পেশাজীবীদের ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘আমরা শঙ্কিত, আগামী নির্বাচনে আমাদের পেছনে ফেলে দিয়ে কোনো একটি কুচক্রী মহল ফায়দা হাসিল করতে চায়। এ ব্যাপারে আপনার সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। পেশাজীবীদের দায়িত্ব না দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী নয় এমন ব্যক্তিদেরও সংশ্লিষ্ট দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ পেশাজীবীদের সঙ্গে জনগণের যে সম্পর্ক এর একটা বিরাট প্রভাব আগামী নির্বাচনে পড়বে। দ্রুত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ না দেওয়া হলে নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এখন যদি ডিসিরাই দেশের সব কাজ করেন তাহলে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেন।’ গত রাতে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় পেশাজীবীরা এসব কথা বলেন।

মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যেন জামায়াত-বিএনপির অভয়ারণ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই যদি হয়, আর শেখ হাসিনার অনুসারীরা অপসারিত হয়, তাহলে আগামী নির্বাচনে তার প্রভাব পড়তে বাধ্য। গুরুত্বপূর্ণ পদ বিশেষ করে সিভিল সার্জন, পরিচালক এবং অন্যান্য পদে প্রশাসন ক্যাডারের আশীর্বাদপুষ্ট কিছু ব্যক্তির আবির্ভাব ঘটেছে, যারা আমাদের চেতনা লালন করে না।’ আইইবির সভাপতি প্রকৌশলী নূরুল হুদা বলেন, ‘বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাক্ষাৎ চেয়ে চারটি চিঠি দিয়েছি। কিন্তু একটি অদৃশ্য দেয়াল সেটা বন্ধ করে রেখেছে।’

তিনি বলেন, কভিড-১৯-এ প্রমাণিত হয়েছে, ডাক্তার, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে যারা কর্মে আছেন তারাই হচ্ছেন প্রথম সারির যোদ্ধা। আর বিশ্বে যত উন্নয়ন হয়েছে তাদের প্রথম কাতারের সৈনিক হচ্ছেন প্রকৌশলীরা। এ করোনাভাইরাসের মধ্যেও কাজ করে পদ্মা সেতু থেকে শুরু করে সব উন্নয়নমূলক কাজ সচল রেখেছেন আমাদের প্রকৌশলীরা।’ বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, ‘আপনি অবাক হয়ে যাবেন, বেসরকারি শিক্ষকরা কলেজের ভাইস প্রিন্সিপালও হতে পারেন না, সরকারি কলেজ থেকে ডেপুটেশনে দায়িত্ব নিয়ে এসে বসেন। গত তিন বছরে শিক্ষামন্ত্রী এক দিনের জন্যও আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি। তিনি সব শিক্ষা কারিকুলাম পরিবর্তন করে দিলেন। আমরা জানিও না।’ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা বলেন, ‘এমন সব লোককে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, মেডিকেলের একটি বইয়ের নামও তারা উচ্চারণ করতে পারেন না। একটা বিষয়ের উন্নতিকল্পে যেগুলো দরকার তার ক্ষমতাও তাদের নেই।’

পেশাজীবীদের ক্ষোভের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন খুবই চ্যালেঞ্জিং একটা সময় আমরা পার করছি। সবখানে অস্থিরতা, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সবাই বিষয়টা মর্মে মর্মে বুঝছেন। আমরাও উপলব্ধি করছি। আমাদের অর্থনৈতিক জীবনও এ যুদ্ধ প্রভাবিত করতে পারে সেটা আমরাও আঁচ করতে পেরেছি। ভাগ্য ভালো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো একজন ডায়নামিক নেতা পেয়েছি। তিনি জেগে আছেন বলেই বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে ঘুমুতে পারে।’ সব কথা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরার আশ্বাস দেন তিনি।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের সদস্যসচিব ডা. কামরুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর মাকসুদ কামাল, সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহাদাত হোসেন শীবলু, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী, স্বাচিবের সভাপতি ইকবাল আর্সলান, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুন নূর দুলাল প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর